রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

‘গলার কাঁটা’ শাহজালালে পরিত্যক্ত ১২ বিমান

  |   রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   127 বার পঠিত

‘গলার কাঁটা’ শাহজালালে পরিত্যক্ত ১২ বিমান

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বেসরকারি কয়েকটি এয়ারলাইন্সের ১২টি বিমান পরিত্যক্ত অবস্থায় প্রায় ১০ বছর যাবৎ পড়ে আছে। এসব অকেজো বিমান নিলামে বিক্রির চেষ্ঠা চলছে। তবে এই উদ্যোগ সফল না হলে একপর্যায়ে কেজি দরে বিক্রির করতে বাধ্য হবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরিত্যক্ত বিমানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৮টি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের। রিজেন্ট এয়ারওয়েজের দুটি, জিএমজি এয়ারলাইন্সের একটি ও এভিয়েনা এয়ারলাইন্সের একটি বিমান রয়েছে। ওইসব বিমানের মালিকদের প্রতিষ্ঠানলোও এখন বন্ধ। বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) পরিত্যক্ত এসব বিমান সরিয়ে নিতে কয়েক দফা চিঠি পাঠিয়েছে। কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে বছর খানেক আগে নিলামের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কয়েকজন মালিক বকেয়া পরিশোধে ৬ মাসের সময় চেয়েছিলেন। পরে তাদের পক্ষ থেকে আর কোনো সাড়া মেলেনি। ফলে দীর্ঘদিন বিমান বন্দরের কার্গো-ভিলেজের বড় জায়গাজুড়ে বিমানগুলো পড়ে আছে। পাশাপাশি এসব বিমানের পার্কিং এবং সারচার্জ বাবদ বকেয়া রয়েছে প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে বলছেন, পরিত্যক্ত ১২ বিমান সরানো হলে যে জায়গা ফাঁকা হবে, সেখানে কমপক্ষে ৭টি বিমান পার্কিং করা যাবে। তবে বিমানগুলোর মালিকপক্ষ কোনো সাড়াই দিচ্ছে না। ‘গলার কাঁটা’ হয়ে দাঁড়ানো বিমানগুলো এবার নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেবিচক। বিমানগুলো সরিয়ে নিতে আমরা অনেকবার চিঠি দিয়েছি। তবে উড়োজাহাজ প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো জবাব দেয়নি। তাদের কাছে পাওনা অর্থও পরিশোধ করেনি। বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তারা কোনো উদ্যোগ নেননি। এখন সিভিল এভিয়েশন আইন অনুযায়ী-পরিত্যক্ত বিমানগুলো বাজেয়াপ্ত করে দ্রুত নিলাম আয়োজন করা হবে। নিলাম করতে পারলে পার্কিং চার্জ ও সারচার্জ বাবদ বকেয়া টাকা যেমন উসুল হবে, তেমনি কার্গো-ভিলেজে জায়গাও ফাঁকা হবে। তবে নিলামে কাক্সিক্ষত দাম না পেলে প্রয়োজনে বিমানগুলো কেজি দরে বিক্রি করে দেওয়া হবে।

সূত্র মতে, এসব প্লেনের পার্কিং চার্জ ও সারচার্জ বাবদ বকেয়া রয়েছে প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বকেয়া জিএমজি এয়ারলাইন্সের। এ প্রতিষ্ঠানের কাছে ৩৬০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বেবিচকের। ২০১২ সালে জিএমজি এয়ারলাইন্স তাদের আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট স্থগিত করে। এরপর আর কখনো ওড়েনি এ সংস্থার বিমান। রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কাছ থেকে বকেয়ার পরিমাণ ২০০ কোটি টাকা। ২০২০ সালের মার্চে বন্ধ হয়ে যায় রিজেন্ট। তার আগেই বেশ কয়েকটি রুটে বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল সংস্থাটি। এর বাইরে পার্কিং চার্জ ও সারচার্জ বাবদ কর্তৃপক্ষের কাছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বকেয়া ১৯০ কোটি টাকা। দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একমাত্র বিমান কোম্পানি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ২০১৬ সাল থেকে বন্ধ।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিমানগুলোর রেজিস্ট্রেশন আগেই বাতিল করেছে বেবিচক। এরপর বিমানবন্দর থেকে এসব বিমান সরিয়ে নিতে দফায় দফায় নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বছর খানেক আগে বকেয়া আদায়ে বিমানগুলো নিলামে বিক্রির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। তখন কয়েকজন মালিক বকেয়া পরিশোধে ছয় মাস সময় চেয়েছিলেন। সেই সময় পার হলেও তাদের দেখা নেই। এজন্য ফের নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা চলছে। শিগগির এ নিলামের প্রস্তুতি নেওয়া হবে।

এদিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিমানগুলো সরিয়ে নিতে আমরা অনেক বার চিঠি দিয়েছি। তবে বিমান প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো জবাব দেয়নি। তাদের কাছে পাওনা অর্থও পরিশোধ করেনি। বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তারা কোনো উদ্যোগ নেননি। এখন সিভিল এভিয়েশন আইন অনুযায়ী- পরিত্যক্ত বিমানগুলো বাজেয়াপ্ত করে দ্রুত নিলাম আয়োজন করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘পরিত্যক্ত ১২ বিমান নিলামে তুলে বকেয়া আদায় কর্তৃপক্ষের মূল উদ্দেশ্য নয়। নিলামের মূল কারণ বিমানবন্দরের নিজস্ব জায়গা বাড়ানো। এখন শাহজালাল বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে।’ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, ‘নিলামের প্রক্রিয়া নির্ধারণে কর্মপদ্ধতি ও সুপারিশমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। আইনি মতামত নিয়ে ধাপে ধাপে এগোচ্ছি। আশা করি, থার্ড টার্মিনাল চালু হওয়ার আগেই নিলাম সম্পন্ন করতে পারবো।’ তিনি বলেন, ‘কার্গো এলাকায় পার্কিং করা এ বিমানগুলো সরানো দরকার। বিষয়টি মাথায় রেখেই কর্তৃপক্ষ দ্রুত নিলাম আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিলামে কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে প্রয়োজনে বিমানগুলো কেজি দরে বিক্রি করে দেওয়া হবে।’

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৭:৩৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11395 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।