রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

টিকা আসার আগে বেক্সিমকো ফার্মার এমডি যা বললেন

বিবিএনিউজ.নেট   |   সোমবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২১   |   প্রিন্ট   |   348 বার পঠিত

টিকা আসার আগে বেক্সিমকো ফার্মার এমডি যা বললেন

সরকার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে যে তিন কোটি ডোজ কোভিড-১৯ টিকা কিনছে, তার প্রথম চালানে ৫০ লাখ টিকা আজ সোমবার আসছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত এ টিকা সেরাম ইনস্টিটিউটের ‘এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর’ বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে আনা হচ্ছে বাংলাদেশে।

টিকা আসার আগের দিন গত রোববার গুলশানে নিজের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে টিকা সংরক্ষণ, তা পৌঁছে দেওয়াসহ এ নিয়ে নানা প্রশ্নের জবাব দেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান।
তিনি বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম চালান ভারতের পুনে থেকে কালকে আসবে। ঢাকায় আসার পর ভ্যাকসিন রাখা হবে বেক্সিমকোর ওয়্যারহাউজে।

নাজমুল জানান, টিকার চালান গ্রহণ করতে তিনি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাবেন। আজ সকাল সাড়ে ১১টায় বিমান পৌঁছাবে ঢাকায়। করোনাভাইরাস মহামারীর এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর আশা হয়ে এসেছে টিকা। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড সেরাম ইনস্টিটিউটেও তৈরি হচ্ছে।

এ টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে গত ৫ নভেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে টিকার ৫০ লাখ ডোজ পাঠানোর কথা সেরাম ইনস্টিটিউট। সেই টিকারও প্রথম চালান আসছে আজ। একজন ব্যক্তিকে এ টিকার দুটি ডোজ নিতে হবে। এর আগে ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে একই টিকা ২০ লাখ ডোজ পাওয়ার পর সরকার ২৭ জানুয়ারি থেকে টিকা প্রয়োগ শুরুর সিদ্ধান্তও নিয়েছে।

২৭ ও ২৮ জানুয়ারি ঢাকায় ৪০০ থেকে ৫০০ জনের মধ্যে পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগ হবে। তারপর ৮ ফেব্রুয়ারি টিকাদান শুরু হবে সারাদেশে। উপহার হিসেবে আসা টিকা সরকারি ব্যবস্থাপনায় সংরক্ষণ করা হলেও কেনা টিকা বেক্সিমকো নিজেরা সংরক্ষণ করে জেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেবে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, আসার পরে এটা রিসিভ করা, এটাকে ফিজিক্যালই ইন্সপেকশন করা, তারপরে এটাকে নিয়ে ওয়্যারহাউজে রাখা। ওয়্যার হাউজে রাখার পর সরকারের ল্যাবরেটরি থেকে প্রতিটা ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র নেওয়া। পরে যখন ক্লিয়ারেন্স পাব, তখন সরকার যে ৬৪টা জেলায় বলবে আমাদেরকে, সেখানে পৌঁছিয়ে দিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে অনেকগুলো কাজ আছে। শুধু পৌঁছলে হবে না, থ্রোআউট প্রসেসে আমাদেরকে কো-চেইন মেইনটেইন করতে হবে এবং প্রত্যেকটা জেলায় গিয়ে প্রমাণ করে দিতে হবে যে সেরামের সেই পুনের প্লান্ট থেকে শুরু করে বোম্বাই এয়ারপোর্ট, ঢাকা এয়ারপোর্ট, ওয়্যার হাউজ, জেলায় কোথাও কোল্ড চেইন ব্রেক হয়নি। কোথাও এটা টু এফ ডিগ্রির উপরে যায় নাই। এ কাজটা এত সহজ না। সব কিছু সিভিল সার্জনকে বুঝিয়ে দিয়ে আসতে হবে। এ্খানে সরকার একেবারে রিস্ক ফ্রি। এই দায়িত্বটা আমাদের উপর দিয়ে দিয়েছে। একটা ফিও তারা দিচ্ছে না। দাম নিয়ে নানা কথা উঠলেও বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাবি করেন, বাংলাদেশ কম দামেই এই টিকা পাচ্ছে।

ভারত যে মূল্যে সেরাম থেকে ভ্যাকসিন কিনছে, সেই মূল্যেই আমরা ভ্যাকসিন কিনছি। সেভাবেই চুক্তি হয়েছে। থাইল্যান্ড ৭ দশমিক ৭ ডলার করে সাইন করেছে প্রতি ডোজ। তাও মে মাসের পরে পাবে। ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স এমন কোনো দেশ নেই, কেউ ৫ ডলারের নিচে না। আর বাংলাদেশ সরকার পাচ্ছে তিন ডলারে, এটা তো বিরাট ব্যাপার। আর শুধু ভারত ছাড়া বাংলাদেশ পাচ্ছে এখন

নাজমুল বলেন, টকশোতে শুনেছি- ‘ওরা তো সেরামের কাছ থেকে কমিশন পায়’। এটা সম্পূর্ণ অবাস্তব ও অবান্তর ভাবনা। কোত্থেকে বলে, আমি চিন্তা করে কোনো কারণ খুঁজে পাই না। বেক্সিমকো কোনোদিন কোনো ভ্যাকসিন ব্যবসার সাথে যুক্ত ছিল না। এ ভ্যাকসিনের জন্য আমাদেরকে ওয়্যারহাউজ করতে হয়েছে, গাড়ি কিনতে হয়েছে এবং এতো ঝুঁকি- এর মধ্যে যদি নষ্ট, শট ফল থাকে, যদি টেম্পারেচার ফল করে সব রিস্ক আমাদের। সরকারের কোনো রিস্ক নেই। এ-রকম এগ্রিমেন্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো হয়নি এবং আমার মনে হয় না এ টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনে কেউ কখনো রাজি হবে।

তিনি বলেন, এই প্রথম ওপেন-ট্রান্সপারেন্ট হিসাব দেওয়া আছে কে কত পাচ্ছে। এখানে কনফিউশনের সুযোগ নেই। একে কোথায় সাধুবাদ জানাবে, তা না করে সরকারের এরকম একটা অভ‚তপূর্ব সাফল্যকে নেগেটিভ করাই যেন এদের উদ্দেশ্য, এরা আসলে কী চায়?

কোভিশিল্ডের কার্যকারিতা নিয়ে নাজমুল বলেন, আমি বলি, আপনি যদি ফাইজারেরটা নেন, মডার্নারটা নেন, কার্যকারিতা মোর দেন ৯০ শতাংশ। আপনি যদি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকারটা নেন, তাহলে এটা কার্যকারিতা ৬০-৭০ শতাংশ। এটা কার্যকারিতা ওই দুইটার চেয়ে কম। এটা ক্লিয়ার-কাট বলা আছে। এ টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়েও আশ্বস্ত করেন তিনি।
‘সেরাম যেটা বলছে, এখন পর্যন্ত কাউকে হসপিটালে যেতে হয়নি।’
বেক্সিমকোর নির্বাহী প্রধান বলেন, তারা যে টিকা আনছেন, সেটা তিনিও নেবেন।

‘আমি চাচ্ছি প্রথমেই নিতে। ইন ফ্যাক্ট গতকাল আমি একজনকে ফোন করি- আমি নিতে চাই। উনারা আমাকে বলেছেন, আপনি ১০ দিন পরে নিয়েন। আমি বলেছি কেন? কারণ আছে। আমার আবার কতগুলো ওষুধে রিঅ্যাকশন হয়। ওই ওষুধগুলো আমি খেতে পারি না। ওরা বলেছে, যাদের এরকম হিস্ট্রি আছে, তাদেরকে একটু বুঝে শুনে নেওয়া উচিত।’
‘আমি ফার্মাসিটিক্যালসের জন্য যেটা আনছি সেটা নেব, ৪/৫ দিন পর নেব। আমি যখন নেব, আপনারা জানবেন,’ বলেন নাজমুল।

দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর কর্মীদের জন্য বেক্সিমকো আলাদা চালানে ১০ লাখ ডোজ টিকা আনছে বলে জানান নাজমুল।
তিনি বলেন, ‘তারা (ওষুধ কোম্পানির কর্মী) সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। তারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন কোভিডে। কারণ আমরা একটা দিনের জন্যও কারখানা বন্ধ রাখতে পারছি না। এটার ডিস্ট্রিবিউশন হচ্ছে দেশের প্রত্যেকটি ওষুধের দোকানে, আমাদের রিপ্রেজেন্টেটিভদের ডাক্তারের চেম্বারে যেতে হচ্ছে, হাসপাতালে যেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।’
‘১০ লাখ মানে পাঁচ লাখ লোককে দেওয়া যাবে। ওষুধ কোম্পানিতে আছে যারা, তাদের সমস্ত এমপ্লয়ি এবং তাদের পরিবারবর্গ,’ বলেন তিনি।

ওষুধ কোম্পানিগুলোকে দেওয়ার পর কিছু বাঁচলে অন্য কোনো কোম্পানিকে দেওয়া হতে পারে জানিয়ে নাজমুল বলেন, ‘ফর এক্সাম্পল বিজেএমইএ থেকে খুব অনুরোধ করা হেেয়্ছ, ওরা কিছু চেয়েছে। আমরা কোনো কোম্পানিকে বলিনি। অথচ চিঠি দিচ্ছে তাদের রিকোয়ারমেন্ট দিয়ে। আমরা শুধু ওষুধ কোম্পানিকে বলেছি, তোমরা রিকোয়ারমেন্ট জানাও।’

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১২:৩৬ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২১

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11395 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।