বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

পিকে হালদারকে ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক

বিবিএনিউজ.নেট   |   মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০২০   |   প্রিন্ট   |   383 বার পঠিত

পিকে হালদারকে ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক

দুর্নীতিবাজ ও অর্থ পাচারকারী হিসেবে বহুল আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশনের (ইন্টারপোল) সহায়তা চেয়ে চিঠি দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এমন তথ্য জানান।

উল্লেখ্য, নানা কৌশলে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে পালিয়ে গিয়ে তিনি কানাডায় বিলাসী জীবন যাপন করছেন। সেখান থেকে আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলকে এই চিঠি দিচ্ছে দুদকের মানিলন্ডারিং শাখা।

এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘পিকে হালদারকে আইনি প্রক্রিয়ায় দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলকে চিঠি পাঠাচ্ছে দুদকের মানিলন্ডারিং শাখা। দুই একদিন অথবা তিন চার দিনের মধ্যে ওই চিঠি ইন্টারপোলে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আলোচিত ব্যক্তি পিকে হালদার হাইকোর্টকে আসি বলেও আসলেন না, তিনি দুর্নীতি মামলার আসামি। তাকে ধরার জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে। আদালতের নির্দেশে আমরা সম্পূর্ণ তালিকা দিয়েছি, এ মামলায় কী কী জব্দ করা হয়েছে, মামলাটি কি পর্যায়ে আছে সেটিও বলেছি।

‘আদালতকে বলেছি, পিকে হালদার হাইকোর্টকে ধোঁকা দিয়েছেন, কাজেই তার জন্য তো আমাদের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সেজন্য আমরা দুর্নীতি দমন কমিশন খুব কঠোরভাবে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে ধরে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রাথমিক কাজ শেষ হয়ে গেছে। অচিরেই ইন্টারপোলের কাছে হয়তো চিঠি চলে যাবে বলেও তিনি জানান।’

কানাডায় পালিয়ে থাকা পিকে হালদার অক্টোবরের শেষের দিকে দেশে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন বলে গণমাধ্যমে খবর হয়, কিন্তু দেশে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রেফতার করার জন্যে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) হাইকোর্ট থেকে আদেশ দেয়ার পর তিনি পিছু হটেন।

দেশে ফেরার জন্য পিকে হালদার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সের মাধ্যমে আবেদন করেন। দেশে ফেরার ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট পিকে হালদার দেশে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে পিকে হালদার আর দেশে ফেরেননি।

অবৈধ ক্যাসিনো জুয়ায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধানে পিকে হালদারের জালিয়াতির বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। অনুসন্ধানে দেশ থেকে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচারের তথ্যও বেরোতে থাকে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক মামলা করে। পরবর্তী সময়ে দুদকের অধিকতর তদন্তে দেশে-বিদেশে পি কে হালদারের আরো বিপুল সম্পদের তথ্য মেলে।

অনুসন্ধানের সঙ্গে জড়িত দুদক কর্মকর্তারা জানান, পিকে হালদার দেশের একটি অর্থপাচারকারী সিন্ডিকেটের সঙ্গে মিলে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। কানাডা, সিঙ্গাপুর, আরব আমিরাত ও ভারতে পাচার করা এসব অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, পিকে হালদার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা, ফাস ফাইন্যান্স থেকে দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা, পিপলস লিজিং থেকে তিন হাজার কোটি টাকা এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্স থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রাথমিক অনুসন্ধানে কানাডা, সিঙ্গাপুর ও ভারতের বিভিন্ন শহরে পি কে হালদারের পাচার করা ৬৫০ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য মিলেছে।

এর মধ্যে শুধু কানাডার টরন্টোতেই মার্কেট, বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ির শো-রুম, চেইন শপসহ প্রায় ৩০০ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছেন দুদকের অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এছাড়া সিঙ্গাপুরে ১০০ কোটি, ভারতে ১৫০ কোটি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১০০ কোটি টাকার সম্পদের প্রমাণ মিলেছে। এর পাশাপাশি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় জালিয়াতি করে চারটি লিজিং কোম্পানি থেকে হাতিয়ে নেয়া পি কে হালদারের হাজার কোটি টাকার সম্পদের তথ্য-প্রমাণ এখন দুদকের হাতে।

এরই মধ্যে পি কে হালদারের দুর্নীতির সঙ্গে নানাভাবে জড়িত ৮৩ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বিএফআইইউ ও দুদক।

মামলার বিবরণে জানা যায়, রিলায়েন্স ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থায় আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন পিকে হালদার। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে থাকা ৮৩ জনের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কৌশলে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি ও তার সহযোগীরা। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই ১৫শ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা তিনি আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৪:৪৩ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11403 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।