আদম মালেক | সোমবার, ০১ জুলাই ২০১৯ | প্রিন্ট | 1195 বার পঠিত
বাংলাদেশের আর্থিক কর্মকাণ্ডকে বিদেশী ব্যাংকের অংশগ্রহণ দীর্ঘদিনের। তবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশী ব্যাংকের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে। এখনও কিছু বিদেশী ব্যাংক বাংলাদেশে ব্যাংকিং কর্মসূচি পরিচালনায় সরকারের অনুমতির অপেক্ষায়। বিদেশী ব্যাংকগুলোর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে- কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, উরি ব্যাংক, এইচএসবিসি, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, ব্যাংক আল-ফালাহ, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, হাবিব ব্যাংক, সিটি ব্যাংক-এনএ এবং স্ট্যাডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন
বিদেশী ব্যাংকগুলোর মধ্যে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন ২০০৪ সালে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রমের সূচনা করে। ব্যাংকটি শ্রীলঙ্কার শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক যার রয়েছে ২৫০টি শাখা ও ৬২৫টি এটিএম বুথ। ব্যাংকটি করপোরেট গভর্ন্যান্সের সর্বোচ্চ মানে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ,বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও ইনস্টিটিউট অব চার্টর্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের সুপারিশ অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে ১৪ বছরের কার্যক্রমে সফলতার জন্য এই ব্যাংকটি ‘গেøাবাল ফাইন্যান্স’ দ্বারা শ্রীলঙ্কার সেরা ব্যাংক বলে বিবেচিত হয়েছে এবং এটি ‘দি ব্যাংকার’ ম্যাগাজিনের ৭ম প্রকাশে ব্যাংক অব দ্যা ইয়ার বলে স্বীকৃত হয়। ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত ১৯২০ সালে। যার সদরদফতর শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে। ২০০৪ সালে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি শাখা খোলে। পরবর্তীতে ব্যাংকটির শাখা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭টিতে। চট্টগ্রামের শাখাগুলো আগ্রাবাদ, সিডিএ অ্যাভিনিউ, জুবিলী রোডে। রাজধানীর শাখাগুলো ধানমন্ডি, গুলশান, মিরপুর, মতিঝিল, পান্থপথ, প্রগতি সরণি, শান্তিনগর, তেজগাঁও ও উত্তরায় রয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে টঙ্গী, নারায়ণগঞ্জ ও সিলেটে ৩টি শাখার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আর বাংলাদেশে করপোরেট অফিস হাদি টাওয়ার কমাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ গুলশান-২ এ অবস্থিত।
মানুষের নিত্য চাহিদা পূরণে ব্যাংকটি ব্যক্তিগত ঋণ যেমন কার লোন, বাড়ি, রেডি ফ্ল্যাট, নির্মাণাধীন ভবন ক্রয়ে ঋণ দিয়ে থাকে। উৎসব উপলক্ষে খরচের জন্য স্বল্পকালীন ও স্বল্প সুদেও কমার্শিয়াল ব্যাংক সিলন ঋণ দেয়। আছে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড সুবিধা।
৩১ মে ডিসেম্বর ২০১৮ সালের নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকটির সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৬৯৩ কোটি ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৭৯ টাকা। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠনে জমা রয়েছে ৩০২ কোটি ৩৯ লাখ ৬৩ হাজার ২৪৯ টাকা। ব্যাংকটির সম্পদের মধ্যে সংক্ষিপ্ত সময়ের কলমানি ২০৯ কোটি টাকা, বিনিয়োগ বাবদ ৪৯৩ কোটি ৯৪ লাখ ১৫ হাজার ৯৬৬ টাকা আছে। অন্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে ঋণ ও অগ্রিম বাবদ ৩ হাজার ৯০০ কোটি ৮২ লাখ ৮০ হাজার ২৭ টাকা ও স্থায়ী সম্পদ ১২ কোটি ২৯ লাখ ১২ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য সম্পদের মূল্য ৪৮৬ কোটি ২৪ লাখ ১ হাজার ৩৬৯ টাকা।
পুঁজি ও দায়ের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও অন্য হিসাব থেকে গৃহীত ঋণ ৮৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৮৫ হাজার ১৯৯ টাকা, ডিপোজিটসহ অন্যান্য হিসাব থেকে সংগ্রহ করেছে ৩ হাজার ৫২২ কোটি ৮৫ লাখ ৯৫ হাজার ৪৭ টাকা। ৪৭৯ কোটি ১৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩৭৬ টাকার পরিশোধিত মূলধনসহ ব্যাংকটির মোট মূলধন ৬ হাজার ৯৭ কোটি ৭১ লাখ ৮০ হাজার ৪৫ টাকা। ব্যাংকটির সামঞ্জস্যপূর্ণ দায় ২ হাজার ৫১২ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৪৪৭ টাকা। অন্যান্য প্রতিশ্রæতিমূলক দায়ের মধ্যে রয়েছে ৫৭০ কোটি ৬৭ লাখ ৯৮১৬ টাকা।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের ঋণের স্থিতি ২ হাজার ৯৩৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা আর খেলাপি ঋণ ৩৭ কোটি ২৫ লাখ, যা মোট ঋণের ১.২৭ শতাংশ। তবে ব্যাংকটি ৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকার প্রভিশন ঘাটতিতে রয়েছে।
উরি ব্যাংক
হানিল ব্যাংক এবং পিস ব্যাংক একত্রিত হয়ে গঠিত হয় হানভিট ব্যাংক। ২০০২ সালে এটি ‘উরি ব্যাংক’ নাম ধারণ করে। এই ব্যাংকটি উরি ফিন্যান্সিয়াল গ্রæপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। উরি ব্যাংকই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম ব্যাংক, যা নন-ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ওয়েবব্রাউজার-ভিত্তিক অনলাইন ব্যাংকিংসেবা প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশে কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে এটি একটি শাখা নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও বর্তমানে ৬টি শাখা রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার গুলশান, মিরপুর, উত্তরা শাখা ছাড়াও ঢাকা এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে একটি কাস্টমার সার্ভিসিং সেন্টার রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ এবং চট্টগ্রামেও রয়েছে ব্যাংকটির দুটি শাখা।
উরি ব্যাংক ১৮৯৯ সালে। ঢাকায় সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ সালে অপারেশন শুরু করে উরি। ডিইপিজেড (এসভিসি), চট্টগ্রাম, উত্তরা, মিরপুর ও নারায়ণগঞ্জে শাখা প্রতিষ্ঠা করে উরি তাদের নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ করে। ঢাকা শাখার আমানত, ঋণ, রেমিটেন্স এবং রফতানি ও আমদানি সেবাসহ আর্থিক পরিষেবাগুলোর পাশাপাশি ঢাকার কাছাকাছি এক্সপোর্ট ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্সে অবস্থিত কোরীয় কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন ব্যাংকিংসেবা প্রদান করে থাকে উরি। এছাড়া চীনা এবং জাপানি সংস্থাগুলোকেও আর্থিক পরিষেবা দিয়ে থাকে তারা। করপোরেট ফাইন্যান্সে বিশেষজ্ঞ একমাত্র কোরিয়ান ব্যাংক হিসেবে, উরি ব্যাংক ঢাকা শাখা ক্লায়েন্টদের সুবিধাজনক ব্যাংকিংসেবা প্রদানের জন্য যথাযথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী উরি ব্যাংকের ঋণের স্থিতি ৭৩৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ব্যাংকটির খেলাপি ৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, যা ঋণের দশমিক ৯০ শতাংশ। ব্যাংকটির বাড়তি প্রভিশন ১ কোটি ২০ লাখ।
এইচএসবিসি
এইচএসবিসি হোল্ডিং পিএলসি বা এইচএসবিসি হলো একটি বহুজাতিক ব্যাংকিংসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে এর সদর দফতর অবস্থিত। এটি পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ব্যাংক। ১৯৯১ সালে দি হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন থেকে নতুন একটি হোল্ডিং কোম্পানি গঠিত হয়ে এইচএসবিসিতে রূপ নেয়। এর পূর্বতন কোম্পানি দি হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন হংকং এবং সাংহাইতে ১৮৬৫ সালে সর্বপ্রথম এর শাখা খোলে।
আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ এবং দক্ষিণ আমেরিকাসহ ৬৬টি দেশে এইচএসবিসির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সারা বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকসংখ্যা ৩ কোটি ৯০ লাখ। এইচএসবিসি বাংলাদেশে ১৯৯৬ সালে কাজকর্ম শুরু করে। এইচএসবিসি বাংলাদেশে প্রাথমিকভাবে শহরাঞ্চলের ওপর গুরুত্ব দেয়। শুরুতে ব্যাংকটি শাখা খোলে ঢাকা ও চট্টগ্রামে। পরে সিলেট ময়মনসিংহ ও নারায়ণগঞ্জেও ব্যাংকটির শাখা খোলা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে এইচএসবিসির ১৩টি শাখা রয়েছে। শাখাগুলো চট্টগ্রামের জিইসি, ঢাকার বনানী,বারিধারা, বীরউত্তম সিআর দত্ত রোড, ধানমন্ডি, গুলশান, লালবাগ ও মতিঝিলে অবস্থিত। এর বাইরে ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ ও সিলেটেও ব্যাংকটির ৩টি শাখা রয়েছে। প্রধান কার্যালয় ঢাকাস্থ তেজগাঁওয়ের বীরউত্তম মীর শওকত আলী সড়কে অবস্থিত।
এইচএসবিসি গ্রæপ বাণিজ্যিক ব্যাংকিং, কনজিউমার ব্যাংকিং, পেমেন্ট এবং ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট, ট্রেড সার্ভিস, ট্রেজারি এবং ক্লিয়ারিংসহ বাংলাদেশে একটি বিস্তৃত আর্থিক সেবা প্রদান করে। খুচরো ব্যাংকিং এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্যিক ব্যাংকিং, করপোরেট এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকিংও এইচএসবিসি করে থাকে।
ব্যাংকটির বাংলাদেশ শাখার সম্পদ মূল্য ১৬৭৭৮ কোটি ১৬ লাখ ২৭ হাজার ৫৭১ টাকা এবং দায়ের পরিমাণ ২১ হাজার ৫৩৭ কোটি ৭৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮১৪ টাকা। চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এইচএসবিসির ঋণের পরিমাণ ৯ হাজার ৬২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপি রয়েছে ১৪৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, যা মোট ঋণের ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এ ব্যাংকটির কোনো প্রভিশন ঘাটতি নেই।
ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান
ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান হচ্ছে পাকিস্তানের একটি প্রধান বাণিজ্যিক ব্যাংক। এর সদর দফতর করাচিতে। ১৯৪৯ সালে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত। যখন পাকিস্তান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো শাখা ছিল না তখন ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এজেন্ট হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করতো। এটি সরকারের ট্রেজারি কার্যক্রমও পরিচালনা করতো। এর প্রথম শাখা ছিল পূর্ব পাকিস্তানে। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন ব্যাংকটির কার্যক্রম থাকলে ১৯৯৪ সালের আগস্ট মাসে ব্যংকটি ঢাকার মতিঝিলে পুনরায় শাখা খোলে। ২০০৪ সালের এপ্রিলে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে ২য় শাখা খোলা হয়। চার বছরের মাথায় ২০০৮ সালের ১ এপ্রিল সিলেটের মেট্রোপলিটন মার্কেটে ব্যাংকটির ৩য় শাখা তৈরি হয়।
দেশে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের ৪টি শাখা। ঢাকার প্রধান শাখা মতিঝিলে। গুলশানেও ব্যাংকটি শাখা খোলে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ ও সিলেটের মেট্রোপলিটন মার্কেটে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের ২টি শাখা রয়েছে। ব্যাংকটির বাংলাদেশস্থ নিয়ন্ত্রক অফিস ঢাকার গুলশান ১ নম্বরে। ৩ এপ্রিল ঢাকার গুলশানে ব্যাংকটির ৪র্থ শাখার উদ্বোধন হয়। গুলশান শাখা কার্যালয় ভবনেই ব্যাংকটির বাংলাদেশস্থ নিয়ন্ত্রক অফিস।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের সম্পদ মূল্য ৩২৯০ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার ৬৯৬ টাকা। দায়ের মূল্যও সমপরিমাণ।
ব্যাংকটির ঋণ স্থিতি ১৪২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১৩৭৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা যা মোট ঋণের ৯৬.৫৭ শতাংশ। তবে ব্যাংকটির বাড়তি প্রভিশন আছে ২৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান বিনিয়োগ ব্যাংকিং, রিটেইল এবং কনজিউমার ব্যাংকিং, করপোরেট বিনিয়োগ ব্যাংকিং, কৃষি অর্থায়ন, সঞ্চিতি সেবা ইত্যাদি ব্যাংকিংসেবা প্রদান করে। কনজিউমার পণ্যে উৎপাদনে এটি সমাজে ব্যাপক সহযোগিতা করে থাকে এবং সামজিক কর্তব্য পালন করে থাকে। জনসংখ্যার নিম্ন এবং মধ্যআয়ের মানুষদের সুবিধার জন্য বিশেষভাবে কিছু সঞ্চয় হিসাব পদ্বতি তৈরি করা হয়েছে। এটি বিশেষভাবে কিছু ক্ষুদ্র অর্থায়ন করে থাকে অনেক ক্ষেত্রে। যেমন- কৃষি, ব্যবসায় এবং শিল্পক্ষেত্রে, শক্ষার্থীদের জন্য। ইসলামি শরিয়াহ পদ্ধতিতেও অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকিংসেবা প্রদান করে। প্রবাসী পাকিস্তানিদের পাঠানো টাকা উত্তোলনের জন্য আলাদা রেমিটেন্স সেবাও প্রদান করে থাকে।
ব্যাংক আল-ফালাহ
ব্যাংক আল-ফালাহ পাকিস্তানের ৫ম বৃহত্তম ব্যাংক। ২০০ শহরে ৬০০ শাখা নিয়ে ব্যাংকটি কাজ করছে। পাকিস্তানের বাইরে আফগানিস্তান বাহরাইন ও বাংলাদেশে ব্যাংকটি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রতিষ্ঠানটির একটি অফিস আছে। ব্যাংক আলফালাহর মালিকানায় রয়েছে আবুধাবি গ্রæপ।
২০০৫ সালের ১৬ মে ১৭ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার নিয়ে ব্যাংক আল-ফালাহ বাংলাদেশে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে। শুরুতেই ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট ব্যাংক আল-ফালাহ সাতটি শাখা খোলে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ, ঢাকার ধানমন্ডি, গুলশান, মিরপুর, মতিঝিল ও উত্তরায় এই শাখাগুলো রয়েছে।
ব্যাংক পণ্য ও সেবা বিস্তৃতির মাধ্যমে ভোক্তা, করপোরেশন ও সরকারের আর্থিক সমস্যা সমাধান প্রদান করে, যার মধ্যে করপোরেট এবং বিনিয়োগ ব্যাংকিং, কনজিউমার ব্যাংকিং এবং ক্রেডিট, বাণিজ্যিক, এসএমই, কৃষি-অর্থব্যবস্থা, ইসলামি ও সম্পদের আর্থিক সহায়তা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংক আল-ফালাহ বাংলাদেশ শাখার সম্পদ মূল্য ২ হাজার ১৭৫ কোটি ৮৩ লাখ ৪৪ হাজার ১১৯ টাকা। সম্পদের সমপরিমাণ দায়ও বহন করছে ব্যাংকটি। এদিকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক আল-ফালাহর ঋণের স্থিতি ৯৪৯ কোটি ৭ লাখ টাকা। ব্যাংকটির খেলাপির পরিমাণ ৩৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা মোট ঋণের ৩ দশমিক শতাংশ। তবে ব্যাংকটির বাড়তি প্রভিশন আছে ৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া
স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া একটি বহুজাতিক ভারতীয় ব্যাংক। এটি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, যার প্রধান কার্যালয় হলো মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে। ১৯৫৫ সালের জুলাই মাসে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। রজনিস কুমার ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন।
ভারতে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ১৯০টি অফিসসহ ২৪ হাজার শাখা রয়েছে। এর বাইরে ৩৫টি দেশে ব্যাংকটির কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়েছে। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার বাংলাদেশস্থ নিয়ন্ত্রক অফিস ঢাকার মতিঝিলে অবস্থিত সাধারণ বীমা ভবনে। ৭টি শাখা নিয়ে ব্যাংকটি বাংলাদেশে কাজ করছে। ঢাকার গুলশান, মতিঝিল, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেটে ব্যাংকটির শাখা চালু আছে।
এসবিআইয়ের নন-ব্যাংকিং সহায়ক যৌথ উদ্যোগগুলো তাদের নিজ নিজ অঞ্চলে বিস্তৃত পরিষেবা প্রদান করে থাকে, যার মধ্যে জীবন বীমা, বণিক ব্যাংকিং, মিউচুয়াল ফান্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফ্যাক্টরিং পরিষেবা, নিরাপত্তা বাণিজ্য এবং প্রাথমিক ডিলারশিপ রয়েছে, যার ফলে এসবিআই গ্রæপ প্রকৃতপক্ষে বড় আর্থিক সুপার মার্কেট এবং ভারতের আর্থিক আইকন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার বাংলাদেশে ঋণের স্থিতি ৬৯২ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ব্যাংকটির খেলাপির পরিমাণ ২০ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা মোট ঋণের ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। প্রভিশন বাড়তি আছে ৫ কোটি ২১ লাখ টাকা।
হাবিব ব্যাংক
ভারতীয় মুসলমানদের স্বার্থসংরক্ষণে ১৯৪১ সালে হাবিব ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্যাংকটির প্রাথমিক সদর দফতর ছিল মুম্বাইয়ে। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর হাবিব ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় পাকিস্তানের করাচিতে স্থানান্তরিত হয়। বর্তমানে ১৬০০ শাখা, ১৭০০ এটিএম বুথ নিয়ে ২৯টি দেশে ব্যাংকটির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ব্যাংকটির গ্রাহক ৮০ লক্ষেরও অধিক। ১৯৫০ সালে ব্যাংকটি প্রথম পাকিস্তানের বাইরে শাখা খোলে। এই আন্তর্জাতিক যাত্রার অংশ হিসেবে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশে হাবিব ব্যাংকের শাখা চালু হয়। ব্যাংকটির বাংলাদেশস্থ প্রধান কার্যালয় রাজধানীর গুলশান ১ নম্বরে। ৭টি শাখা নিয়ে ব্যাংকটির কার্যক্রম। ঢাকার গুলশান, কাওরানবাজার, মতিঝিল, নয়াবাজার, উত্তরায় হাবিব ব্যাংকের ৫টি শাখা রয়েছে। ঢাকার বাইরে সিলেট ও চট্টগ্রামে আছে ২টি শাখা। ব্যাংকটি করপেরেট ব্যাংকিং, বাণিজ্যিক ব্যাংকিং, বিনিয়োগ ব্যাংকিং, ইসলামী ব্যাংকিং, জারাই ব্যাংকিং, গেøাবাল ট্রেজারি অর্থ ব্যবস্থাপনা ও সম্পদ ব্যবস্থাপনায় সেবা দিয়ে থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাবিব ব্যাংকের ঋণ স্থিতি ৪৩৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এই ঋণের মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৩৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক। ব্যাংকটির বাড়তি প্রভিশন আছে ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
সিটি ব্যাংক-এনএ
সিটি ব্যাংক-এনএ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক একটি ব্যাংক যা ১৮১২ সালে প্রতিষ্ঠিত। এটি সিটি গ্রæপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। ব্যাংকটির সদরদফতর নিউইয়র্ক। বিশ্বের ৯৮টি দেশে ব্যাংকটির কার্যক্রম বিস্তৃত। এই আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে সিটি ব্যাংক ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশে তিনটি শাখা, দুটি ব্যাংকিং অফিস এবং ১৫০ জন কর্মচারী নিয়ে শুরু করে। পরবর্তীতে ব্যাংকটি বাংলাদেশে আরও একটি শাখা খোলে। এই শাখাগুলো রাজধানীর ধানমন্ডি, গুলশান মতিঝিলে এবং বাকিটি চট্টগ্রামে। বাংলাদেশে সিটি ব্যাংক বিশ্বব্যাপী বহুজাতিক সংস্থাগুলোর সাথে যোগাযোগ, করপোরেট, আর্থিক গ্রাহক এবং ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট, ট্রেড সার্ভিসেস, এজেন্সি, ট্রাস্ট, সরাসরি হেফাজত এবং ক্লিয়ারিং সলিউশনসহ বেসরকারি ক্লায়েন্টস গ্রæপ (আইসিজি) পরিচালনা করে। বাংলাদেশে ক্লায়েন্টদের জন্য রাজধানীর বাজার সমস্যার সমাধানে শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক। সিটি ব্যাংকের করপোরেট ব্যাংকিং, প্রতিযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব এবং একটি সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যবসায়িক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সচেষ্ট। করপোরেট ও বিনিয়োগ ব্যাংকিং, ট্রেজারি এবং ট্রেড সলিউশনস, মার্কেটস এবং সিকিউরিটিজ সার্ভিসেসকে অন্তর্ভুক্ত করে গত চার দশকে সিটি ব্যাংক-এনএ বাংলাদেশের পুঁজিবাজার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে সিটি ল্যান্ডমার্ক অর্জন করেছে। সার্বিক রেটিং অ্যাডভাইজরির জন্য সিটি ব্যাংক বাংলাদেশ সরকারের একমাত্র স্বাধীন উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচিত হয়। বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেড প্রথম বিশ্বব্যাপী বন্ড সিটি ব্যাংকের নেতৃত্বে হয়। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের জন্য আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেটেড ঋণ গ্রহণ করে, সিটি ব্যাংক বাংলাদেশে বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও ব্র্যাকের জন্য ১৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিশ্বের প্রথম ট্রিপল এ-রেটিং মাইক্রো ক্রেডিট সুরক্ষার লেনদেনের ব্যবস্থা করেছে। সিটি সফলভাবে দেশের সর্ববৃহৎ স্থানীয় মুদ্রা, বিডিটি ৭.০৭ বিলিয়ন (মার্কিন ডলার ১০২ মিলিয়ন)-এর সিনিয়র সিকিউরিটি বন্ড অফারের আয়োজন করে। গ্রামীণফোন লিমিটেডের জন্য ১৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আইপিও ব্যবস্থা করেছে, যা বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় আইপিও ব্যবস্থাপনা। সিটি দেশের ১.৫ বিলিয়ন (২১.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) দেশের প্রথম সিন্ডিকেটেড কৃষি টার্মের অর্থায়ন সুবিধা দিয়ে থাকে। প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড কর্তৃক দেশের প্রথম অসুরক্ষিত, অপরিবর্তনযোগ্য, নিম্নগামী বন্ডের বিডিটি ২.৫ বিলিয়ন ডলারের একমাত্র প্লেসমেন্ট এজেন্ট ছিল সিটি। সিটি বাংলাদেশে নগদ ব্যবস্থাপনা উদ্ভাবনের নেতা। ২০০৩ সালে সিটি ডাইরেক্ট লেনদেনের ব্যাংকিং চালু করার জন্য প্রথম ব্যাংক। ২০১২ সালে সরাসরি ডেবিট প্রোগ্রাম চালু করার জন্য প্রথম ব্যাংক সিটি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতায় ২০১৪ সালে দেশের সর্বত্র ইলেকট্রনিক পেমেন্ট চালু করার জন্য প্রথম ব্যাংক। সিটি বাংলাদেশ ই-কালেক্ট ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্ট পরিচালনায় একমাত্র ব্যাংক। বৈদ্যুতিক তহবিল স্থানান্তরের মাধ্যমে রিয়েল টাইম এমআইএস প্রদানে সক্ষম একমাত্র ব্যাংক। বাংলাদেশে করপোরেশনগুলোর জন্য ‘সর্বোত্তম ই-সমাধান ব্যাংক’ হিসেবে অ্যাসেট ম্যাগাজিন কর্তৃক বাংলাদেশের ‘সেরা করপোরেট ইনস্টিটিউশনাল ডিজিটাল ব্যাংক’ হিসেবে পুরস্কার লাভ করে।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সালের বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে সিটি ব্যাংক-এনএ’র ঋণ ১৬৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ। ব্যাংকটির নিরাপত্তা সঞ্চিতি প্রয়োজনের চেয়ে ২ কোটি ৫৯ লাখ বেশি।
স্ট্যাডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক
স্ট্যাডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক একটি ব্রিটিশ ব্যাংক। ১৮৫৩ সালে রানী ভিক্টোরিয়ার আদেশানুসারে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় লন্ডনে অবস্থিত। ব্যাংকটি কনজিউমার, করপোরেট এবং প্রাতিষ্ঠানিক সেবা দিয়ে বিশ্বব্যাপী অবস্থান করছে। ব্যাংকটি যুক্তরাজ্যভিত্তিক হওয়া সত্তে¡ও এটি সেখানে রিটেইল ব্যাংকিং করে না এবং এর ৯০ শতাংশ মুনাফা আসে এশিয়া, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে।
প্রথম আন্তর্জাতিক ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশে ঋণ বিতরণ করার অনুমতিপ্রাপ্ত হয় ব্যাংকটি। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে প্রথম এলসি খোলার অনুমতি পায়। বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশে ২৬টি শাখা এবং ৮৩টি এটিএমসহ ২ হাজারের বেশি স্থানীয় কর্মী নিয়ে ৬টি শহরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, বগুড়া ও নারায়ণগঞ্জে একমাত্র বিদেশী ব্যাংক। সাভার ও চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এ ঢাকা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) মধ্যে দেশের একমাত্র অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট রয়েছে। দ্রæত ব্যাংকিং করার জন্য স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের গৌরবান্বিত ঐতিহ্য আছে গ্রাহকের সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে নতুন প্রযুক্তি এবং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে ক্রমাগতভাবে বাংলাদেশের অত্যাধুনিক অনলাইন ব্যাংকিং এমনকি ফেসবুক প্ল্যাটফর্মের সাথে গ্রাহকদের নিকটবর্তী থাকতে সবসময় সচেষ্ট ব্যাংকটি।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিগত ঋণ, হোম লোন, হোম ক্রেডিট, অটো লোনসহ জীবনধারণের জন্য গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের পণ্য সরবরাহ করে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য অগ্রাধিকারমূলক সম্পূর্ণ কর্মচারী ব্যাংকিং চালু করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। ব্যবসায়িক ক্লায়েন্টদের জন্য অর্থায়নকে সহজতর করার মাধ্যমে অর্থনীতিতে ভ‚মিকা রেখে চলেছে ব্যাংকটি।
দায়বদ্ধতা নিয়ে কীভাবে গ্রাহকদের চাহিদা অনুসারে বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়, ফিক্সড ডিপোজিট প্রোডাক্টস দিয়ে সবসময় গ্রাহকদের ক্রান্তিকালের জন্য সঞ্চয় করতে উৎসাহিত করে ব্যাংকটি। এছাড়া স্কুল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট আছে যা অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের সঞ্চয়ের অভ্যাসকে লালন পালন করতে সাহায্য করে। গ্রাহকদের প্রতিটি প্রয়োজন মেটানোর জন্য কার লোন, হাউজ লোন ছাড়াও ব্যাংকটির রয়েছে ভ্যাকেশন লোন যা অন্য ব্যাংকগুলো থেকে স্বতন্ত্র। ক্রেডিট কার্ডের ঝুড়িতে স্ট্যান্ডার্ড নতুন যুক্ত করেছে ভিসা স্বাক্ষর ক্রেডিট কার্ড। এছাড়া দেশের সেরা ক্রেডিট কার্ড, যেমন প্লাটিনাম, গোল্ড ও ক্লাসিক এই কার্ডগুলো প্রতিটি জীবনের বিভিন্ন প্রয়োজনের সাথে মানুষের বিভিন্ন স্তরের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ক্রেডিট ছাড়াও ব্যাংকটির ডেবিট কার্ডও রয়েছে।
প্রধান শাখা, এটিএম এবং অনলাইন ব্যাংকিং এবং ব্যক্তিগত ব্যাংকিং গ্রাহকদের ঋণ এবং লেনদেনের মাধ্যমে গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করে থাকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড সাদিক, ইসলামিক ব্যাংকিং বিভাগটি ২০০৯ সালে চালু করে ব্যাংকটি। সাদিক আর্থিক কেন্দ্রের মাধ্যমে ব্যক্তিদের জন্য শরিয়াহভিত্তিক সেবা বিস্তৃত করে। গ্রাহকদের জন্য শরিয়াহ-অনুবর্তী ক্রেডিট কার্ডের প্রচলন করে ২০১২ সালে। সাদিক প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড চালু করার মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথম ব্যাংক, আরেকটি মাইলফলক তৈরি করে ইংল্যান্ডের এই ব্যাংক। বর্তমানে সাদিক একটি বিস্তৃত ডিপোজিট প্রোডাক্ট প্রদান করে, যেমন- সেভিং, বর্তমান এবং টার্ম ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট; ঋণ পণ্য, যেমন- অটো এবং হোম ফাইন্যান্স এবং কার্ড পণ্য, যেমন- প্লাটিনাম, গোল্ড এবং গ্রিন ক্রেডিট কার্ড; যাতে গ্রাহকরা বিশ্বস্ততার সাথে ঝামেলাহীন সম্পূর্ণ ব্যাংকিংসেবা উপভোগ করতে পারে। পুরোনো আন্তর্জাতিক ব্যাংক হিসেবে স্থানীয় সংস্কৃতি বোঝার এবং মূল্যায়ন করার মাধ্যমে গ্রাহকদের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে যথাযথভাবে সেবা প্রদান করতে বদ্ধপরিকর ব্রিটিশ মালিকানাধীন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রদত্ত সর্বশেষ প্রতিবেদন মতে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের ঋণ স্থিতি ১৮৫১৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ব্যাংকটির ঋণ খেলাপি ৫৭০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা যা ঋণের ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ। প্রয়োজনের বাইরে নিরাপত্তা সঞ্চিতি ৪২ কোটি ৩ লাখ টাকা।
Posted ২:৩৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০১ জুলাই ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed