বিবিএনিউজ.নেট | রবিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট | 785 বার পঠিত
ব্যাংক হিসাব খুলতে এখন আর অনেকগুলো ফরম পূরণ করতে হবে না। শুধু আঙুলের ছাপ বা মুখচ্ছবি দিয়েই যেকেউ যেকোনো ব্যাংকে হিসাব খুলতে পারবেন। ব্যাংকগুলো জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডার থেকে হিসাবধারীর আঙুলের ছাপ বা মুখচ্ছবি মিলিয়ে নেবে। এতে ব্যাংক হিসাব খুলতে গ্রাহককে আরও পাঁচ-ছয় পৃষ্ঠার ফরম পূরণ করে সময় নষ্ট করতে হবে না।
ব্যাংকের শাখায় গিয়ে গ্রাহক আঙুলের ছাপ বা মুখচ্ছবি দেওয়ার পর যাবতীয় তথ্য পূরণের কাজ শাখার কর্মকর্তারাই করবেন। তারা ওই গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) থেকে সব তথ্য নেবেন। তবে যাদের এনআইডি নেই, তারা এ সুবিধা পাবেন না। এমনকি বাড়িতে বসেও যেকেউ নিজের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। ব্যাংকের ওয়েবসাইটে থাকা ইলেকট্রনিক নো ইউর কাস্টমার (ই-কেওয়াইসি) করে ঘরে বসে হিসাব খুলা যাবে।
বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের সব ব্যাংক, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানি, স্টক ডিলার ও ব্রোকার, পোর্টফোলিও ম্যানেজার, মার্চেন্ট ব্যাংকার ও অ্যাসেট ম্যানেজারদের উদ্দেশে এমন এক নীতিমালা জারি করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সব পক্ষকে ই-কেওয়াইসি সিস্টেম সংযুক্ত করার নির্দেশনাও রয়েছে এতে।
বিএফআইইউর কর্মকর্তারা বলছেন, এ পদ্ধতিতে খুব সহজেই হিসাব খোলা যাবে। যারা হিসাব খুলতে ফরম পূরণ করতে চান না বা ফরম পূরণ করার মতো শিক্ষিত নন, এ পদ্ধতি তাদের জন্য খুবই সহায়ক হবে। এতে অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন ঝুঁকিও কমবে। এছাড়া এ পদ্ধতিতে বিও অ্যাকাউন্ট খোলা ও বীমা করাও সহজ হবে।
বেশ কিছু দিন ধরেই ব্যাংকে হিসাব খোলা আরও সহজতর করতে কাজ করছিল অর্থ মন্ত্রণালয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো। এজন্য একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসেবে নতুন এই নীতিমালা জারি করল বিএফআইইউ।
বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট বা হিসাব খোলার ফরম হয় ইংরেজিতে। ১০ পৃষ্ঠার এ ফরমে একই তথ্য কয়েকবার লিখতে হয়, অপ্রয়োজনীয় তথ্যও দরকার হয়। হিসাব খোলার জন্য ওই শাখায় আগে থেকে হিসাব রয়েছে এমন কাউকে খুঁজে বের করে তার প্রত্যয়ন নিতে হয়। ফলে একটি হিসাব খুলতেই কয়েক দিন লেগে যায় সাধারণ মানুষের। স্বল্প শিক্ষিতদের পক্ষে ওই ফরম পূরণ করাও অসম্ভব।
এ অবস্থায় হিসাব খোলার ফরম ১৬ পৃষ্ঠা থেকে কমিয়ে দুই পৃষ্ঠায় নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। তাতে বলা হয়, হিসাব খুলতে আগ্রহী ব্যক্তির ২০ ধরনের তথ্য চাওয়া হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর না থাকলে পাসপোর্ট নম্বর, জন্মনিবন্ধন নম্বর বা ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর থাকতে হবে। এর কোনোটিই না থাকলে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর রয়েছে এমন যেকোনো ব্যক্তি হিসাব খুলতে আগ্রহী ব্যক্তিকে চেনেন বলে প্রত্যয়ন করলেই হিসাব খোলা যাবে। পুরনো কোনো হিসাবধারীর প্রত্যয়নের দরকার হবে না। নতুন ফরম সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর সবাই ব্যবহার করবে। তবে হিসাব খোলার ফরমেই অর্থের উৎস সুনির্দিষ্টভাবে ও বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করতে হবে।
Posted ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed