শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নে গোড়ায় গলদ

আদম মালেক   |   মঙ্গলবার, ০৬ আগস্ট ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   572 বার পঠিত

সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নে গোড়ায় গলদ

ব্যাংকঋণে সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নে সরকারি নীতির গোড়ায় গলদ। সরকার একদিকে সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নে বারবার তাগিদ দিচ্ছে, অন্যদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দরপত্র আহ্বান করে সর্বোচ্চ দরদাতা ব্যাংককে আমানত দিচ্ছে। কোনো ব্যাংকই ৬ শতাংশ সুদে সরকারি আমানত পায়নি। তাছাড়া ঋণখেলাপিদের দৌরাত্ম্য ও তারল্য সংকটের কারণে ঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলোকে বেশি সুদ নিতে হচ্ছে। তাই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রতি লাইসেন্স বাতিলের হুঁশিয়ারি থাকলেও সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নে তা কতটুকু সুফল বয়ে আনবে এ নিয়ে সন্দিহান অর্থনীতিবিদরা।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন হবে না। তিনি বলেন, সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নে গোড়ায় গলদ। প্রজ্ঞাপন জারি করে কোনো কাজ হবে না। দেশের সার্বিক অর্থনীতির খারাপ অবস্থা। খেলাপি ঋণ বেড়ে গেছে। ব্যাংকের ওপর মানুষের আস্থা কম। নিম্নমুখী আমানতের প্রবৃদ্ধি। ব্যাংকগুলো কাক্সিক্ষত ঋণ দিতে পারছে না। তাই সুদের হার বেশি।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে ৬ শতাংশ এবং ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদহার বাস্তবায়নে খুব শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এ নির্দেশনা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। সিঙ্গেল ডিজিট প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবেঅর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের লাইসেন্স দেয় সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার লাইসেন্স বাতিল করার ক্ষমতাও তাদের আছে। সুতরাং বেঁধে দেওয়া সুদহার না মেনে ব্যাংকগুলো যাবে কোথায়।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ব্যংকগলো সরকারের কাছ থেকে নানা সুযোগ সুবিধা নিয়েছে অথচ অধিকাংশ ব্যাংকই আজও সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন করেনি। বাণিজ্যিক ব্যাংকে সরকারি আমানতের পরিমাণ ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়। ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণ (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা সিআরআর) সাড়ে ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ করা হয়। তবুও বেশীরভাগ ব্যাংকে সিঙ্গেল ডিজিট আজও অধরা।

ব্যাংকারদের দাবি,আমানতের সুদহার ৬ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনায় বিপাকে পড়ছেন সুদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিরা। আমানতকারীদের যেসব আমানতের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তারা আগের মতো সুদ না পাওয়ায় তা তুলে নিয়েছেন। এতো কম সুদে ব্যাংকগুলোও এখন আমানত পাচ্ছে না। এমনকি সরকারি ব্যাংকও বেসরকারি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়েছে। সরকারি প্রকল্পের টাকাও ৬ শতাংশে পাওয়া যায় না। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দরপত্র আহ্বান করে সর্বোচ্চ দরদাতা ব্যাংককে আমানত দিচ্ছে। কোনো ব্যাংকই ৬ শতাংশ সুদে সরকারি আমানত পায়নি। সিঙ্গেল ডিজিট কার্যকরের নিদেশনা দেয়ার পরও রাজধানী উন্নয়ন করপোরেশন, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ বিমান, পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল ১০ শতাংশের বেশি সুদে টাকা বাণিজ্যিক ব্যাংকে আমানত রাখছে বলে জানা গেছে।

বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, সব ব্যাংকের জন্য সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তাবায়ন কঠিন। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দরপত্র আহ্বান করে সর্বোচ্চ দরদাতা ব্যাংককে আমানত দিচ্ছে। কোনো ব্যাংকই ৬ শতাংশ সুদে সরকারি আমানত পায়নি।

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা ফরমান আর চৌধুরী মনে করেন সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন হবে। তবে সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ৬ শতাংশ হারে আমানত সরবরাহে এগিয়ে আসতে হবে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৬ আগস্ট ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।