| রবিবার, ১৮ জুলাই ২০২১ | প্রিন্ট | 481 বার পঠিত
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআইআই) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, করোনাকালীন অবস্থায় স্বাস্থ্যঝুঁকি উপেক্ষা করে গরুর হাটে সমবেত না হয়ে, করোনা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে না তুলে, কোরবানির জন্য বাজেটকৃত টাকা গরিব মানুষের মধ্যে দান করে দিলেই ভালো হবে। তিনি দৈনিক ব্যাংক বীমা অর্থনীতি পত্রিকার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এই অভিমত ব্যক্ত করেন। অবশ্য এই অভিমত একান্তই তার ব্যক্তিগত। এর সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সম্পর্ক নেই।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন দৈনিক ব্যাংক বীমা অর্থনীতি পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক এমএ খালেক। তার সাক্ষাৎকারের পূর্ণ বিবরণ এখানে উল্লেখ করা হলো
ব্যাংক বীমা অর্থনীতি: পবিত্র ঈদুল আজহা আসন্ন। এই ঈদের প্রাক্কালে লাখ লাখ মানুষ গরু ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে যুক্ত হন। এদিকটি বিশেষ বিবেচনায় রেখে করোনাকালীন কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। কিন্তু বিধিনিষেধ শিথিল করায় হাজার হাজার মানুষ কোরবানির পশুর হাটে জড়ো হচ্ছেন। এতে সংক্রমণ বেড়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি আপনি একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
ড. আহসান এইচ মনসুর: বিষয়টি বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। আমাদের এখানে সারা বছরই গরু বেচা-কেনা হয়। ঈদের সময় অল্প কয়েকদিনে প্রচুর গরু-ছাগল বিক্রি হয়। এই সময় খামারিরা হয়তো একটু বেশি দাম পান। অন্য সময়ও গরুর মাংসের দাম ৫৬০ টাকা কেজি। অতএব ঈদের সময় গরু বিক্রি না হলে খামারিরা পথে বসবেন এটা ঠিক নয়, বরং বেশি বেশি লাভের আশায় তারা গরু বিক্রি করার জন্য হাটে উপস্থিত হলে তারা যদি করোনায় সংক্রমিত হন, তাহলে সেই ক্ষতির পরিমাণ আরো বেশি হবে। আমাদের মতো ক্রেতাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি না বাড়িয়ে কোরবানির পশু ক্রয়ের টাকা গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণ করে দিলেই, বরং সবার জন্য অধিকতর মঙ্গলজনক হবে।
ব্যাংক বীমা অর্থনীতি: ঈদের আগে রাজধানীর আশপাশের বেশি কিছু কারখানায় শ্রমিকরা বেতন-ভাতার দাবিতে আন্দোলন করছে। ঈদের আগে এটা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। এ ব্যাপারে করণীয় কী হতে পারে বলে মনে করেন?
ড. আহসান এইচ মনসুর: মূলত তৈরি পোশাকশিল্পেই এই আন্দোলন হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে বিজিএমইএর উচিত হবে তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে শ্রমিকদের পাওনা মিটিয়ে দেয়া। পরে মালিকদের নিকট থেকে তারা এই টাকা আদায় করে নেবে। ২০০৯ সালে এ ধরনের তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। প্রস্তাব করা হয়েছিল, সরকার এই তহবিলের জন্য ৫০০ কোটি টাকা দেবেন। আর কারখানা মালিকরা তাদের মুনাফার শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ দেবেন। তারা তখন রাজি হননি। পরে তহবিল গঠিত হয়েছে। তবে মনে রাখতে হবে, যদি ১০-১২টি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ ঘটে, তা বিজিএমইএর সদস্য সংখ্যার তুলনায় খুবই নগণ্য।
ব্যাংক বীমা অর্থনীতি: আপনারা করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের কথা বলেছিলেন, কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। এখনো কী এ ধরনের তহবিল গঠনের আবশ্যকতা আছে?
ড. আহসান এইচ মনসুর: আমি বলবো, করোনাকালীন বিধিনিষেধের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের জন্য তহবিল গঠনের প্রয়োজন আছে। বাজেট প্রণয়নের সময় নীতিনির্ধারকরা হয়তো মনে করেছিলেন, করোনাকালীন বিধিনিষেধ দীর্ঘস্থায়ী হবে না। তাই তারা এ ব্যাপারটি উপেক্ষা করেছেন। এখন তো এটা পরিষ্কার যে আমরা দীর্ঘমেয়াদি বিধিনিষেধের দিকেই যাচ্ছি। এই বিধিনিষেধ সহসাই শেষ হবে না। কারণ আমরা টিকা দিতে পারছি না। সরকারের উচিত হবে কাজ হারানো মানুষগুলোর কাছে চাল, ডাল, লবণ, তেল ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেয়া।
ব্যাংক বীমা অর্থনীতি: অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় নতুনভাবে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়া মানুষগুলো সম্পর্কে কিছুই বলেননি। এ ব্যাপারে কিছু বলবেন কী?
ড. আহসান এইচ মনসুর: অর্থমন্ত্রী নতুন দরিদ্র দেখছেন না। আমরা তো নতুন দরিদ্র মানুষ দেখতে পাচ্ছি। প্রচার মাধ্যম আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে মানুষের দুরবস্থা। নতুন দরিদ্র নেই, এটা হচ্ছে সরকারের ব্যাখ্যা। আমরা বলছি, নতুন দরিদ্র আছে। কেবল অস্বীকার করলেই তো হবে না। প্রমাণ দেখাতে হবে। বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার জরিপে নতুনভাবে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়া মানুষ সম্পর্কে বলা হয়েছে। সরকার যদি সেই পরিসংখ্যান বিশ^াসযোগ্য মনে না করেন, তাহলে নিজস্ব সংস্থা দিয়ে জরিপ করাতে পারেন। বিআইডিএসকে দিয়েও জরিপ করানো যেতো।
ব্যাংক বীমা অর্থনীতি: অর্থমন্ত্রী বলছেন, করোনাকালীন অবস্থাতেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে সরকার রেমিট্যান্স প্রবাহের ওপর নগদ ২ শতাংশ হারে আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছেন। আপনি এ ব্যাপারে কী বলবেন?
ড. আহসান এইচ মনসুর: সরকার প্রবাসী আয়ের ওপর ২ শতাংশ নগদ আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছেন। আমি মনে করি, এটি অপচয় মাত্র। সরকার তিন থেকে চার হাজার কোটি টাকা নদীতে ফেলে দিয়েছেন। যারা ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাতেন, তারা প্রণোদনা না দিলেও পাঠাতেন। আর যারা হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাতেন, তারা প্রণোদনা দিলেও হুন্ডির মাধ্যমেই টাকা পাঠাবেন।
ব্যাংক বীমা অর্থনীতি: করোনাকালীন অবস্থায় ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা কতটা বাস্তবসম্মত?
ড. আহসান এইচ মনসুর: করোনার কারণে অর্থনীতিতে যে স্থবিরতা বিরাজ করছে সরকারের ভাষ্যে তা উল্লিখিত হয়নি। মানুষকে টিকা না দিয়ে প্রবৃদ্ধির কথা বলে কোনো লাভ নেই। ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষকে দ্রুত টিকার আওতায় নিয়ে আসা গেলে আতঙ্ক কমে যাবে। অর্থনীতি যদি এতোই ভালো চলে, তাহলে ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ নেই কেন? ব্যক্তিখাতে ব্যাংকঋণের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশে নেমে গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এটা ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়ে থাকে।
আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, প্রণোদনা প্যাকেজের বাইরে কোনো ঋণ দেয়া হয়নি। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের ঋণের ওপর আরোপিত সুদের হার সবচেয়ে কম। অথচ ঋণপ্রবাহ সবচেয়ে কম। তার অর্থ হচ্ছে দেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ নেই। বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ থাকলে সুদের হার তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না। শিল্পে বিনিয়োগের পরিবেশ নেই বলে মানুষ শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করছে। বাড়ি কিনছে। কিন্তু শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের রাশ টেনে ধরতে না পারলে ১৯৯৬ সালে অথবা ২০১০ সালের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে, যা কোনোভাবেই অর্থনীতির জন্য কাম্য হতে পারে না।
ব্যাংক বীমা অর্থনীতি: করোনার কারণে ব্র্যাংক ব্যাংকের রেভিনিউ আয় বা ব্যবসায়িক কার্যক্রমে কী রকম প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন?
ড. আহসান এইচ মনসুর: করোনার কারণে বিশ^ব্যাপী অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। করোনার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রতিটি সেক্টরই প্রায় স্থরিব হয়ে পড়েছে। ব্যাংকিং সেক্টরও এই আর্থিক দুরবস্থা থেকে রেহাই পায়নি। অধিকাংশ ব্যাংকই প্রত্যাশা মতো ব্যবসায় করতে পারেনি। তবে ব্র্যাক ব্যাংক এক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ব্যতিক্রম। করোনাকালীনও ব্র্যাক ব্যাংকের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে। গত অর্থবছরে (২০২০-২০২১) ব্র্যাক ব্যাংক ৪৫৫ কোটি টাকার মতো কর-পরবর্তী নিট মুনাফা অর্জন করেছে। যদিও এই মুনাফার পরিমাণ আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০২০) তুলনায় কিছুটা কম। আগের বছর প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা অর্জিত হয়েছিল। করোনাকালীন বিপর্যয়কর অবস্থায় মুনাফা অর্জনের এই পরিমাণকে খারাপ বলা যাবে না। ব্র্যাক ব্যাংক উচ্চহারে প্রভিশনিং করেছে। যদি প্রভিশনিং না করা হতো, তাহলে আমাদের মুনাফার পরিমাণ আরো অনেকটাই বেড়ে যেতো। করোনার কারণে গত অর্থবছরের খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশনিং না করলেও চলতো। কিন্তু ব্র্যাক গ্রাহক আমানতের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিধানের জন্য উচ্চহারে প্রভিশনিং করেছে। আমরা একটি বড় অঙ্কের অর্থ প্রভিশন আকারে সংরক্ষণ করেছি। ব্র্যাক ব্যাংকের প্রভিশনিংয়ের হার হচ্ছে ১৭০ শতাংশ। যেখানে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করলেই চলতো। উচ্চহারে প্রভিশনিং করার ফলে ব্র্যাক ব্যাংকে সংরক্ষিত গ্রাহক আমানত এবং ঋণ উভয়ই এখন অধিকতর নিরপদে রয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টরের অবস্থা যদি আগামীতে আরো খারাপ হয়, তাহলেও ব্র্যাক ব্যাংকের কোনো অসুবিধা হবে না।
ব্র্যাক ব্যাংকের আর একটি উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম হচ্ছে করোনাকালীন এসএমই খাতে পর্যাপ্ত ঋণদানের ব্যবস্থা করা। অন্যান্য ট্রেডিশনাল ব্যাংকগুলো যখন এসএমই খাতে ঋণদানের ক্ষেত্রে সংরক্ষণবাদি নীতি গ্রহণ করেছে, সেখানে ব্র্যাক ব্যাংক করোনাকালীন এসএমই খাতে ঋণদান কার্যক্রম আগের তুলনায় অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে ব্র্যাক ব্যাংকের লোন পোর্টফোলিও’র ৫৩ শতাংশই হচ্ছে এসএমই সেক্টরের ঋণ। কয়েক বছর আগেও এটা ছিল ৪২ শতাংশ। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এসএমই সেক্টরের জন্য যে ঋণ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়, তা বাস্তবায়নে ব্র্যাক ব্যাংক সাফল্য প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্র্যাক ব্যাংককে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। ব্র্যাক ব্যাংক প্রথমেই এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে। টার্গেটকৃত পুরো ঋণই বিতরণ করা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্র্যাক ব্যাংককে আরো ২০০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়। আমরা সেই লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করেছি। এরপর আরো ২০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়। আমরা সেই লক্ষ্যমাত্রাও অতিক্রম করেছি। গত মার্চ মাসের আগেই আমরা ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষ থেকে এসএমই খাতে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছি। অর্থাৎ এসএমই খাতে মূল টার্গেট ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার বিপরীতে আমরা ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিতরণ করেছি। অন্যান্য ব্যাংক এসএমই খাতে ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে টার্গেট পূরণ করেত পারেনি। এটা ব্র্যাক ব্যাংকের একটি বড় ধরনের সাফল্য বা অর্জন। চলতি অর্থবছরেও এসএমই খাতে ঋণ বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আমাদের যে টার্গেট দেয়া হবে আমরা তা অর্জন করার চেষ্টা করবো।
ব্যাংক বীমা অর্থনীতি: করোনার প্রভাব কাটিয়ে ওঠা অথবা করোনা থেকে উত্তরণের জন্য ব্র্যাক ব্যাংক কী বিশেষ কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করেছে?
ড. আহসান এইচ মনসুর: করোনায় ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য এক ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনলেও ব্র্যাক ব্যাংক সার্বিক বিচারে নিরাপদ আছে। আগামীতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হলেও ব্র্যাক ব্যাংকের তেমন কোনো অসুবিধা হবে না বলেই আশা করছি। ব্র্যাক ব্যাংকের ঋণমান এমনিতেই ভালো ছিল। তারপর করোনাকালীন আমরা উচ্চহারে প্রভিশন সংরক্ষণ করেছি। কাজেই ব্র্যাক ব্যাংকের কোনো অসুবিধা হবার কথা নয়। তারপরও আমরা ঋণদান ও ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করে চলেছি। বড় কোনো ধাক্কা এলেও ব্র্যাক ব্যাংক তা মোকাবিলা করতে পারবে। আমাদের একটি বিশেষ নীতি হচ্ছে, ‘নট টু লিভ দ্য ক্লায়েন্ট।’ অর্থাৎ গ্রাহককে ত্যাগ করা নয়। আমরা যতো বিপদই আসুক না কেন ক্লায়েন্টদের সঙ্গে নিয়েই তা মোকাবিলা করতে চাই। ক্লায়েন্টের ওপর তাদের সামর্থ্যইে বাইরে কিছু চাপিয়ে দেয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। ক্লায়েন্ট যেটুকু ভার বহন করতে পারবে, তাদের ওপর সেটুকু ভারই চাপিয়ে দেয়া হয়। ঋণের কিস্তির জন্য তাদের ওপর প্রবল চাপ দেয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। গ্রাহক যেটুকু টাকা দিতে পারবে, তাদের নিকট থেকে সেটুকু টাকাই আদায় করা হচ্ছে। পরবর্তীতে যদি তাদের সামর্থ্য বৃদ্ধি পায়, তাহলে বেশি পরিমাণে কিস্তি আদায় করা হবে। সামর্থ্যরে বাইরে চাপ দিয়ে বেশি টাকা আদায় করতে গেলে তা গ্রাহকের জন্যও অসুবিধাজনক হবে। আর ব্যাংকের জন্যও সেটা ক্ষতিকর হবে। একইসঙ্গে গ্রাহকের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তাদের নতুন ঋণদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। করোনাকালীন অবস্থাতেও ব্র্যাক ব্যাংকের ঋণদান কার্যক্রম বন্ধ করা হয়নি। গ্রাহক, বিশেষ করে এসএমই সেক্টরের উদ্যোক্তারা ঋণ চাইলে আমরা তাদের নতুন ঋণ দেবো। ব্র্যাক ব্যাংকের হাতে বিনিয়োগযোগ্য উদ্বৃত্ত তারল্য আছে। কাজেই ঋণদানের ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হবে না। উপযুক্ত গ্রাহক পেলে আমরা ঋণ দিতে পারবো। তবে একইসঙ্গে আমরা অতিরিক্তি বিনিয়োগে যাচ্ছি না। সেটা ব্যাংকের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। অর্থাৎ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা এক ধরনের সমতা বিধান করার নীতি গ্রহণ করেছি। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে আমরা ঋণ দিয়ে থাকি।
Posted ২:৫৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৮ জুলাই ২০২১
bankbimaarthonity.com | rina sristy