| শনিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট | 652 বার পঠিত
২০১৯ সালের সেরা বার্ষিক প্রতিবেদন তৈরির জন্য ২৩ করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেছে দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। ১৩টি ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১৮ প্রতিষ্ঠানকে সান্ত্বনাসূচক সার্টিফিকেট অব মেরিট প্রদান করে আইসিএবি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দীন এবং ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হামিদ উল্ল্যাহ ভূঁইয়া।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা কেবল হিসাব, কর, নিরীক্ষা এবং ব্যবস্থাপনা পরামর্শ সেবার মতো প্রচলিত ক্ষেত্রেই অবদান রাখছেন না, বর্তমানে তারা কৌশলগত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা ও ব্যবসায় প্রবৃদ্ধিতে এর কার্যকর বাস্তবায়ন এবং সার্বিক অর্থনীতির উন্নয়নেও অবদান রাখছেন। সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর পাশাপাশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আস্থা তৈরিতে তাদের ভূমিকা প্রশংসাযোগ্য।
এ বছর বেসরকারি ব্যাংকিং খাতে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড প্রথম, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়া যৌথভাবে দ্বিতীয় এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক যৌথভাবে তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেছে। এছাড়া ব্যাংকিং খাতে সার্টিফিকেট অব মেরিট পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড।
ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ক্যাটাগরিতে আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড প্রথম, আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড দ্বিতীয় এবং লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেছে।
ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে প্রথম পুরস্কার লাভ করেছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড। দ্বিতীয় হয়েছে ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেড। সামিট পাওয়ার লিমিটেড তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেছে। এছাড়া এই ক্যাটাগরিতে সার্টিফিকেট অব মেরিট পেয়েছে বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস (বিএসআরএম) লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, রেনাটা লিমিটেড, বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেড ও শাইনপুকুর সিরামিকস লিমিটেড।
যোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে গ্রামীণফোন লিমিটেড। বীমা খাতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেছে যথাক্রমে গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ও রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কার লাভ করেছে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।
এনজিও খাতে প্রথম পুরস্কার লাভ করেছে সাজিদা ফাউন্ডেশন। ঘাসফুল ও কোডেক যৌথভাবে দ্বিতীয় এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেছে। এ খাতে সার্টিফিকেট অব মেরিট পেয়েছে ব্যুরো বাংলাদেশ।
সেবা খাতে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে ইউনাটেড হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড। কৃষিতে প্রথম হয়েছে গোল্ডেন হারভেস্ট এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
সমন্বিত প্রতিবেদন ক্যাটাগরিতে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড প্রথম, আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড দ্বিতীয় এবং ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড ও ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড যৌথভাবে তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেছে। এছাড়া এ খাতে সার্টিফিকেট অব মেরিট পেয়েছে সিটি ব্যাংক, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক এবং ইসলামী ব্যাংক।
করপোরেট সুশাসনে যৌথভাবে প্রথম পুরস্কার লাভ করেছে আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড ও লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড। দ্বিতীয় পুরস্কার লাভ করেছে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড। যৌথভাবে তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড। এছাড়া এ খাতে সার্টিফিকেট অব মেরিট পেয়েছে আরো সাতটি প্রতিষ্ঠান। আর এ বছর ওভারঅল উইনার হিসেবে পুরস্কার লাভ করেছে আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড।
সব মিলিয়ে এ বছর মোট ৫৪ প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রতিবেদন জমা পড়ে আইসিএবিতে। ডাইভার্সিফায়েড হোল্ডিংস ক্যাটাগরিতে নির্ধারিত পাস নম্বর না পাওয়ার কারণে এই ক্যাটাগরিতে কোনো প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেয়নি আইসিএবি।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হামিদ উল্ল্যাহ ভূঁইয়া বলেন, নিরীক্ষিত প্রতিবেদন ও আর্থিক প্রতিবেদনে সবকিছু সুন্দর করে উপস্থাপন করা হলেও এখনো অনেক ক্ষেত্রে গুণগতমান বজায় রাখা হয় না। ৯০ শতাংশ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে নিরীক্ষকের কোনো মতামত থাকে না। অথচ আমরা যখন এসব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করি, তখন আমাদের চোখে অনেক ব্যত্যয় ধরা পড়ে।
সাবেক অর্থ সচিব এম মতিউল ইসলামকে প্রধান করে নয় সদস্যবিশিষ্ট জুরি বোর্ডের মাধ্যমে আইসিএবি পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকা যাচাই-বাছাই করে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে। জুরি বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন সাবেক কম্পট্রোলার অব অডিটর জেনারেল আহমেদ আতাউল হাকিম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর পরিচালক সাইয়্যদ ফরহাদ আনোয়ার, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক একেএম আফতাবুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, এফআরসি কাউন্সিল মেম্বার ড. মাহমুদা আখতার এবং ডেইলি ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শাহ হোসেইন ইমাম।
বাণিজ্য সচিব বলেন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা একটি প্রতিষ্ঠানে আর্থিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে থাকেন। এক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ তাদের নিরীক্ষিত প্রতিবেদনের ওপর ভরসা করে। তাই নিরীক্ষার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও আস্থার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য নিরীক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইসিএবির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক এফসিএ এবং রিভিউ কমিটি ফর পাবলিস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্স অ্যান্ড রিপোর্টসের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির এফসিএ।
Posted ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed