সোমবার ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x
এশিয়া-প্যাসিফিক সম্মেলন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি

উন্নয়নশীলদের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি উন্মুক্ত

বিবিএনিউজ.নেট   |   বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   492 বার পঠিত

উন্নয়নশীলদের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি উন্মুক্ত

উন্নয়নশীলদের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি উন্মুক্ত। সরকার বিদেশী বিনিয়োগের সুরক্ষা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মঙ্গলবার  ‘দি এশিয়া প্যাসিফিক কনফারেন্স অন ফিন্যান্সিং ফর ইনক্লুসিভ অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এক্সপ্লোরিং: এ নিউ ফিন্যান্সিয়াল ল্যান্ডস্কেপ ফর এশিয়া-প্যাসিফিক’ শীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) শতবর্ষ ও আইসিসি বাংলাদেশের (আইসিসিবি) ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সম্মেলনটির আয়োজন করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় সম্মেলনটির আয়োজকদের মধ্যে আইসিসি বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোস্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক (ইউএনএসকাপ), এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের ট্রেড ফিন্যান্স প্রোগ্রাম (টিএফপি) এবং লন্ডন ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকিং অ্যান্ড ফিন্যান্স।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইসিসি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুর রহমান, জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল আরমিডা সালসিয়া আলিশজাবানা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, এরই মধ্যে আমরা ব্যবসা ও বিনিয়োগের বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। এতে করে ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে ৫৮ শতাংশ। এ ধারাবাহিকতায় বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও শিল্পনীতিও সমন্বয় করা হয়েছে। আরো টেকসই বিদেশী ও স্থানীয় বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এ বিষয় নিয়ে কাজ করছে।

বাংলাদেশ বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশীদার হতে চায় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি উন্মুক্ত এবং আমরা এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখব বলে আশা করছি। বাংলাদেশ প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়। এর সুরক্ষা নিশ্চিতেও সরকার সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে অনেক উদার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নীতি আমাদের রয়েছে। বাণিজ্য বাধা নেই বললেই চলে। শুল্কহার যৌক্তিক করা হয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পোর্টফোলিও বিনিয়োগ প্রচারণায় আমাদের প্রণোদনা প্যাকেজও অনেক আকর্ষণীয়।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ২০৩০ এজেন্ডা বা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে আমরা সক্রিয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে অর্থায়ন ঘাটতিই বাংলাদেশ ও অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ। এককভাবে কোনো দেশের পক্ষে অর্থায়নের জোগান নিশ্চিত করা সম্ভব না। এজন্য সংশ্লিষ্ট সব জাতিকে সক্রিয় হতে ও পারস্পরিক সহযোগিতার জোরালো সুপারিশ জানাচ্ছি।

সম্মেলনে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস বলেন, উন্নয়নের জন্য বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততা গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি অর্থনৈতিক নীতিমালা ও অর্থায়ন পদ্ধতি সহায়ক হতে হবে, যাতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে অর্থায়ন হয়।

ভিডিও বার্তায় জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন বলেন, এসডিজি এজেন্ডা বাস্তবায়নে সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে অংশীদারিত্ব জোরদার করতে হবে। সবার অংশগ্রহণে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এসডিজি অর্জন হবে। উন্নয়নের স্বার্থে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করতে সম্মিলিতভাবে এগোতে হবে।

সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সরকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করছে। পাশাপাশি জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা ও অবকাঠামো উন্নয়নও করছে। বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। তবে এর জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বাণিজ্য বাড়ানো প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সহায়তা নয়, বাণিজ্য প্রসারে আঞ্চলিক যোগাযোগ উন্নয়ন দরকার। সরকার বাণিজ্য প্রসারে দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোয় জোর দিচ্ছে। বিনিয়োগ সম্প্রসারণে প্রণোদনাও দেয়া হচ্ছে।

সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশের সফলতার মূলে রয়েছে মৌলিক কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি। এর মধ্যে রয়েছে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, জীবনমানে উন্নতি, শিশুমৃত্যু ও দারিদ্র্য হ্রাস। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে টেকসই অর্থনীতি ও সামাজিক অগ্রগতি সমান্তরালভাবে হতে হবে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনায় জমির পরিমাণ কম। শিল্পায়নের জন্য কৃষিজমি ব্যবহারের সুযোগও সীমিত। এ পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পিত শিল্পায়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এ অর্জন নিশ্চিত করতে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে চ্যালেঞ্জের সমাধান করতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত অর্থায়নের জোগান অন্যতম একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ। জাতিসংঘের মতে, এসডিজি বাস্তবায়নে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থাকে সবার অংশগ্রহণে একসঙ্গে পুনর্গঠন করতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নে অর্থায়ন জোগানের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর সহায়তার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বয় প্রয়োজন।

ইউএনএসকাপের নির্বাহী সেক্রেটারি আরমিদা সালসিয়া আলিশজাবানা বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর মাধ্যমে এ অঞ্চলের পর্যাপ্ত অর্থায়ন উেসর জোগানে উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে করে কমপ্লায়েন্স অর্থায়নের পথ সুগম হয়। এ সম্মেলনের মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য অর্থায়নের রোডম্যাপ তৈরি হবে বলে আশা করা যায়।

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ বক্তব্য রাখেন আইসিসিবির সহসভাপতি রোকিয়া আফজাল রহমান। এতে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও আইসিসিবি নির্বাহী পর্ষদের সদস্য এ কে আজাদ, মীর নাসির হোসেন, আইসিসিবি নির্বাহী পর্ষদের সদস্য আফতাব উল ইসলাম, আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ, কুতুব উদ্দিন, মাহবুবুল আলম, এমসিসিআইয়ের সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ওসামা তাসীর প্রমুখ। এ সম্মেলনের মিডিয়া পার্টনার সমকাল, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস, চ্যানেল২৪ ও আরটিভি।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:০০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11397 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।