সোমবার ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

করোনার ধাক্কায় কৃষিঋণের বিতরণ কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ২৮ জুন ২০২০   |   প্রিন্ট   |   517 বার পঠিত

করোনার ধাক্কায় কৃষিঋণের বিতরণ কমেছে

করোনার ধাক্কায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে কৃষিঋণ বিতরণে। করোনার কারণে লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই বন্ধ ছিল শিল্প এলাকার বাইরে অবস্থিত ব্যাংক শাখাগুলো। করোনাকালীন ব্যাংকিং লেনদেন সীমিত থাকায় ঋণের আবেদনই করতে পারেননি কৃষকরা। ব্যাংকগুলোও এই খাতে ঋণ বিতরণে আগ্রহী হয়ে উদ্যোগ নেয়নি।এর ফলে তিনমাসে ব্যাংকের কৃষিঋণের বিতরণ কমেছে ৫০ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

এই লকডাউনেও পুরোটাই সচল ছিল কৃষি খাত। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় সংকটের সময় কৃষি খাতকে সর্বাত্মকভাবে এগিয়ে নেওয়া। কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। কৃষি খাতে স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধির জন্য আগামী ১ বছর সুদ ভর্তুকি দেবে সরকার। কৃষকরা ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন। আর ৫ শতাংশ সুদ ভর্তুকি হিসেবে ব্যাংকগুলোকে পরিশোধ করবে সরকার। এ ছাড়া কৃষি খাতের ঋণের অন্তত ৬০ শতাংশ শস্য খাতে দিতে হবে। কিন্তু সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী- কৃষকদের সেবা দিতে এগিয়ে আসেনি ব্যাংকগুলো। সীমিত আকারে ব্যাংক খোলা ছিল শুধু শহরাঞ্চলে। উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের সব শাখা বন্ধ ছিল। নতুন ফসল আবাদে ঋণের জন্য আবেদনই করতে পারেননি কৃষকরা। সংকটের সময় ঋণই পাচ্ছে না কৃষকরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি বছরের মার্চে কৃষি খাতে ৩ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো, যা আগের বছরের মার্চের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। গত বছরের এই মাসে ৬ হাজার ২২২ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। পরের মাস এপ্রিলে কৃষিঋণ বিতরণে ধস নামে। এপ্রিলে মাত্র ৪৯৬ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো। আগের বছর একই সময় ঋণ দেয় ২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। এপ্রিলে ঋণ বিতরণ কমে প্রায় ৭৯ শতাংশ। এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে ঋণ বিতরণ বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। তবে তা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ঋণ বিতরণ কমেছে ৩৭ শতাংশ। আগের বছরে মে মাসে ব্যাংকগুলো কৃষি খাতে ১ হাজার ৮১০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করে। সব মিলিয়ে লকডাউনের তিন মাসে কৃষি খাতে ব্যাংকগুলো ৫ হাজার ৮৬ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। আগের বছরের এই তিন মাসে ঋণ দেয় ১০ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে ঋণ বিতরণ কমেছে ৫০ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাকালীন ব্যাংকিং সীমিত ছিল। ফলে অন্য ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করতে পারেনি। তবে অন্য ব্যাংকও ঋণের কার্যক্রম শুরু করেছে। তারাও সাধারণ ঋণের পাশাপাশি প্রণোদনার ঋণও দিচ্ছে। অনেক ব্যাংকই লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে ঋণ বিতরণ করতে পারবে বলে আমার মনে হয়। কারণ অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কৃষিকে চাঙ্গা করা জরুরি।

চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে কৃষি খাতে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। কিন্তু ১১ মাসে (জুলাই-মে) পর্যন্ত বিতরণ করেছে ১৮ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে এক মাসে ৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করতে হবে। এ ছাড়া আগের বছরের আলোচ্য ১১ মাসে ব্যাংকগুলো কৃষি খাতে ঋণ দেয় ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। এই হিসেবে ঋণ বিতরণ কমেছে প্রায় ৯ শতাংশ।

এদিকে লকডাউনে শাখা বন্ধ থাকায় কৃষিঋণের আদায়ও অনেক কমে গেছে। এপ্রিলে আদায় হয়েছে মাত্র ৭৬৭ কোটি টাকা। আগের বছরে এই মাসে আদায় হয় ১ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। মে মাসে আদায় আরও কমে মাত্র ৫৬১ কোটি টাকায় নেমে আসে। আগের বছরের মে মাসে আদায় হয় ১ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। এগারো মাসে আদায় ২০ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা থেকে কমে ১৮ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। সামগ্রিকভাবে আদায় কার্যক্রম কমেছে সাড়ে ১১ শতাংশ। তবে এপ্রিল ও মে মাসে আদায় অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম স্বাভাবিক ধারায় ছিল। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি এই নয় মাসে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ হয় ১৫ হাজার ৯২ কোটি। আগের বছর ছিল ১৪ হাজার ১১৩ কোটি টাকা। কৃষিঋণ বৃদ্ধি পায় ৭ শতাংশ। অন্যদিকে আদায়ের পরিমাণ ১৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয় ১৫ হাজার ৫০৮ কোটি।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১২:০৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৮ জুন ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11397 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।