সোমবার ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

খেলাপি ঋণ ধ্বংস করছে মূলধন!

বিবিএনিউজ.নেট   |   শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   912 বার পঠিত

খেলাপি ঋণ ধ্বংস করছে মূলধন!

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনতা ব্যাংকের ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে মূলধন ঘাটতি ছিল মাত্র ১৬১ কোটি টাকা। এক বছর পরে ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি ৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

জনতা ব্যাংককে এক বছরের ব্যবধানে ৫ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে ফেলেছে ব্যাংকটির সবচেয়ে পুরনো গ্রহিতা ক্রিসেন্ট গ্রুপের সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপি। এছাড়া আননটেক্স নিয়েছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা।

ব্যাংক খাতে বিপুল মূলধন ঘাটতির জন্য খেলাপি ঋণকে দায়ী করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকিভারিত সম্পদের বিপরীতে মূলধন (সিআরএআর) অনুপাত ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ। আগের বছর একই সময়ে সিআরএআর-এর এই অনুপাত ছিল ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলো ঝুঁকিভারিত সম্পদের বিপরীতে ১১ দশমিক ৮৭৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলোর মূলধন খেয়ে ফেলায় সিআরএআর-এর বিপরীতে আমানত কমে গেছে। খেলাপি ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণ করতে গিয়ে মূলধন কমে গেছে।

২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর আমানত ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। আগের বছর ব্যাংকগুলোর আমানত ছিল ৯৪ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। বেড়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে খেলাপি ঋণ একলাফে বেড়েছে ২৬ শতাংশ বা প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। আগের বছর একই সময়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা।

ব্যাংক খাতে সার্বিকভাবে মূলধন কমেছে। তবে একটি সরকারি ব্যাংক মূলধন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে দু’টি প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ ঋণ খেলাপি হওয়ার কারণে।

২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ১০টি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ২৬ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা। এরমধ্যে নয়টি ব্যাংক মিলে ২০ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা। শুধু জনতা ব্যাংকেরই ঘাটতি ৫ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা।
বেসরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিভারিত সম্পদের বিপরীতে মূলধন অনুপাত গড়ে ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং বিদেশি খাতের নয়টি ব্যাংকের এই অনুপাত ২৬ শতাংশ।

তবে সরকারি ব্যাংকগুলোর মূলধন সংকট এখন উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে ঢাকা ব্যাংকের এমডি ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, অধিকাংশ সরকারি ব্যাংক ঝুঁকিভারিত সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণে ব্যর্থ। ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়নে ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে ঝুঁকিভারিত সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণের হার ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ করতে হবে।

ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী বলেন, খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে গিয়ে সার্বিকভাবে ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়ন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে সরকারি ছয় ব্যাংকের সিআরএআর ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ কম ছিল।

ব্যাংকিং সেক্টরে স্থিতিশীলতা জোরদার করার জন্য ২০১৫ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে সব ব্যাংকের সিআরএর হিসাবের জন্য বাংলাদেশ ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়ন শুরু করে। ব্যাসেল-৩ ঘোষণা অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সিআরএআর ১১ দশমিক ৮৭৫ শতাংশ বাস্তবায়ন করার কথা।

১১ দশমিক ৮৭৫ শতাংশ সিআরএআর বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংকগুলো ১০ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করেছে। কম আছে ১ দশমিক ৮৭৫ শতাংশ। ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, আমরা ব্যাংকগুলোর যত দ্রুত সম্ভব মূলধন ঘাটতি পূরণ করে ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়নের তাগিদ দেব।

বিশ্বব্যাপী ব্যাংকের মূলধন পর্যাপ্ততা ও তারল্যের নতুন মান নিয়ন্ত্রক ব্যাসেল-৩।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ২:২০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11397 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।