বিবিএনিউজ.নেট | বুধবার, ০৭ আগস্ট ২০১৯ | প্রিন্ট | 553 বার পঠিত
চামড়া খাতে দেয়া ঋণ সহজে আদায় হয় না। তারপরও শিল্পের স্বার্থে কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে এবার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক। কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে প্রতিবছর স্বল্পমেয়াদি ঋণ দেয় সরকারি সোনালী, জনতা, রূপালী ও অগ্রণী ব্যাংক।
ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চামড়াশিল্পের স্বার্থে কাঁচা চামড়া সংগ্রহে স্বল্পমেয়াদি ঋণ দেয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। যার সিংহভাগই দিয়ে থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, রূপালী ও অগ্রণী ব্যাংক। প্রতিবছর ঈদুল-আজহার আগে এ ঋণ দেয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী যারা আগের বছরের ঋণ পুরোপুরি শোধ করে শুধু তারাই এ ঋণ পায়। তবে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের বিবেচনায় অনেক প্রতিষ্ঠান ঋণ দিয়ে থাকে।
ব্যাংকগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারও কাঁচা চামড়া কিনতে ঋণ দিচ্ছে জনতা ব্যাংক। এ বছর ২০০ কোটি টাকা নতুন ঋণ দেবে ব্যাংকটি।
এ বিষয়ে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ জাগো নিউজকে জানান, এবার ১২টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ২০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে বলে ঠিক করা হয়েছে। গত বছর ৩২ প্রতিষ্ঠানকে ২০৫ কোটি টাকার ঋণ দেয়া হয়েছিল। গতবার যারা খেলাপি হয়েছে এবার তাদের ঋণ দেয়া হবে না বলেও তিনি জানান।
রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক এ বছর চামড়া কিনতে ঋণ দেবে ২০০ কোটি টাকা। গত বছর ব্যাংকটি এ খাতে ঋণ দিয়েছিল ১৭৫ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আতাউর রহমান প্রধান বলেন, গত বছর চামড়া কিনতে ১৭৫ কোটি টাকা দেয়া হয়েছিল। এবার ২০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হবে। মঙ্গলবার বোর্ডে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগের ঋণ আদায় ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।
সোনালী ব্যাংক এ বছর ৭০ কোটি টাকা ঋণ দেবে। ভুলুয়া ট্যানারি, আমিন ট্যানারি ও কালাম ট্যানারিকে এ ঋণ দেয়া হবে বলে ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান। গত বছরও এসব প্রতিষ্ঠানকে চামড়া কিনতে একই পরিমাণ ঋণ দিয়েছিল সোনালী ব্যাংক।
চামড়া কিনতে এবার ১৩৫ কোটি টাকা ঋণ দেবে অগ্রণী ব্যাংক। গত বছর চারটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছিল প্রায় ১৪৬ কোটি টাকা।
এদিকে চামড়া শিল্পের স্বার্থে কাঁচা চামড়া সংগ্রহে ঋণ দিচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। প্রতিবছর ঈদুল আজহার আগে এ ঋণ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নির্দেশনা মোতাবেক কম সুদেই এসব ঋণ বিতরণ করা হয়।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সালমা ট্যানারির মালিক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, চামড়া কেনার ঋণ মূলত এক বছরের জন্য দিয়ে থাকে। যারা গত বছরের টাকা পরিশোধ করেছে তারাই ঋণ পায়। প্রতিবছরই এ লক্ষ্য ঠিক করে। তবে এ ঋণ কাগজে-কলমে ঠিক না করে ব্যবসায়ীরা যেন সঠিক সময়ে ঋণ পায়, তা নিশ্চিত জরুরি হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকার ও ব্যবসায়ীরা মিলে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। এবার ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৪৫-৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৫-৪০ টাকা হবে। গত বছর প্রতি বর্গফুটের দাম একই ছিল। ২০১৭ সালে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ছিল ঢাকায় ৪৫-৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০-৪৫ টাকা।
এছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৮-২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৩-১৫ টাকায় সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে ব্যবসায়ীদের। গতবার খাসির চামড়ার দামও ছিল একই। তবে ২০১৭ সালে খাসির চামড়ার দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ২০-২২ এবং বকরির চামড়া ১৫-১৭।
সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর, রফতানি আদেশ কমে যাওয়া ও অর্থ সংকটের কারণে এ বছর চামড়ার দাম কমানোর সুপারিশ করেছিল কাচা চামড়ার ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকরা। এসব বিবেচনায় সরকার দাম না বাড়িয়ে আগের মূল্য নির্ধার করেছে।
Posted ৪:৩৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৭ আগস্ট ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed