বিবিএনিউজ.নেট | বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট | 384 বার পঠিত
আগামী ১ জানুয়ারি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে শুরু হতে যাচ্ছে ২৫তম ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-২০২০’। এবারের মেলাকে দৃষ্টিনন্দন করতে প্রধান গেটে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ছোঁয়া থাকবে। এবারই প্রথম মেলার প্রধান গেট ও বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করবে গণপূর্ত অধিদফতর।
শুধু তাই নয়, মেলার বিভিন্ন প্রান্তে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিসহ দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হবে। এক কথায় ২৫তম বাণিজ্যমেলা হবে বঙ্গবন্ধুময়।
তবে বাণিজ্য মেলায় নান্দনিকতা বাড়লেও কমেছে স্টল সংখ্যা। এবছর মেলার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে নির্দিষ্ট সময়ে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় ফের দরপত্র আহ্বান করা হয়। তবে দেশীয় ব্যবসায়ীদের তুলনায় আগ্রহ বেড়েছে বিদেশি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক অভিজিৎ চৌধুরী জানান, পূর্বাচলের স্থায়ী জায়গা প্রস্তুত না হওয়ায় এবারও আগারগাঁওয়ে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি বিকেল ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। মেলাকে আরও দৃষ্টিনন্দন করতে এর প্রধান গেটে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ছোঁয়া থাকবে। এবারই প্রথম মেলার প্রধান গেট ও বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করবে গণপূর্ত অধিদপ্তর। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজনসহ এবারও সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন থিম থাকবে মেলাজুড়ে।
তিনি আরো বলেন, এবার বাণিজ্যমেলায় স্টল সংখ্যা কমেছে। এখন পর্যন্ত মেলায় প্যাভিলিয়ন, মিনি-প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও স্টলের মোট সংখ্যা ৪৪১টি। গতবছর স্টল সংখ্যা ছিল ৫৫০টি। সবচেয়ে বেশি কমেছে সাধারণ স্টল। গতবছর আমাদের ২৫০টি সাধারণ স্টল থাকলেও এবছর সেখানে ৫০টি স্টল করা হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ২৩৩টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিদেশি ২৬টি প্যাভিলিয়নের বিপরীতে আবেদন পড়ে ৫৫টি। এখনও যাচাই-বাছাই চলছে। এপর্যন্ত চারটি ব্যাংক মেলায় বুথ ও ব্যাংকিং কার্যক্রম চালুর আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, মেলাকে কেন্দ্র করে যানজট নিরসনে এরইমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) চিঠি দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণের ধুলা কমাতে এবারও তিন বেলা করে পানি ছিটানো হবে। নিরাপত্তার জন্য র্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা সদস্যদের উপস্থিতিসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। মেলায় ডিজিটাল এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার, ইকোপার্কসহ নতুন অনেক কিছুই থাকবে। এরই মধ্যে মেলা প্রাঙ্গণে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা মেলা প্রাঙ্গণ প্রস্তুত করতে পারবো।
ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, এবারের মেলায় অব্যবস্থাপনা রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ভোক্তা অধিদফতরের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নজরদারি করবেন। এছাড়া থাকছে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যমেরা। মেলার ভেতরে দর্শনার্থীদের জন্য খোলামেলা জায়গা থাকছে, যাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাঘুরি করতে পারেন। আর মেলার দুই প্রান্তে দুটি শিশুপার্ক, দুটি দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা, একটি ইকোপার্ক, একটি মা ও শিশু কেন্দ্র, একটি বঙ্গবন্ধু প্যাভেলিয়ন এবং একটি ইপিবির তথ্য সেবাকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। থাকছে ডিজিটাল এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার (ডিজিটাল টাচ স্ক্রিন প্রযুক্তি), যার মাধ্যমে ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা নির্দিষ্ট স্টল ও প্যাভিলিয়ন খুব সহজে খুঁজে বের করতে পারেন।
এছাড়াও পর্যাপ্ত এটিএম বুথ, রেডিমেড গার্মেন্ট পণ্য, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্প, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালী ও উপহার সামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থাকছে। আরও থাকছে তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিক পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি, নির্মাণ সামগ্রী ও ফার্নিচার সামগ্রীর স্টল।
মেলায় সবমিলিয়ে ৪৪১টি স্টল থাকছে। এর মধ্যে- প্রিমিয়াম প্যাভিলিয়ন ৬১টি, প্রিমিয়াম মিনি প্যাভিলিয়ন ৪৭টি, সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১১টি, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়ন ৭৫টি, প্রিমিয়াম স্টল ৮৪টি, রেস্টুরেন্ট ২টি, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন ৮টি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন ৬টি, বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৬টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি, বিদেশি প্রিমিয়াম স্টল ১৭টি, স্ন্যাকস বুথ ৮টি ও ফুড স্টল ৩৫টি। এছাড়া সাধারণ স্টল ৫০টির মধ্যে নারীদের জন্য রয়েছে ২০টি স্টল।
বাংলাদেশ ছাড়াও ২৫তম ঢাকা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলায় ২৮টি বিভিন্ন দেশের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে। এর মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ভুটান, নেপাল, মরিশাস, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপ, জাপান, ইতালি, দুবাই, ডেনমার্ক, নিউজল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ব্রাজিল, ফিলপিনস, রাশিয়া, আমেরিকা, জার্মানি, তাইওয়ান ও হংকং।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, মাসব্যাপী অনুষ্ঠেয় এই মেলা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রাপ্ত বয়স্কদের মেলায় প্রবেশের জন্য টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। গতবারের মতো এবারও মেলার টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাবে। প্রতি বছরের মতো এবারও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে থাকছে বাণিজ্য মেলার আয়োজনে।
Posted ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed