বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০১৯ | প্রিন্ট | 538 বার পঠিত
দ্বিতীয় মাসের মতো বছরের তৃতীয় মাসে এসেও হোঁচট খেল পণ্য রফতানি আয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টম্বর) ৯৬৪ কোটি ৭৯ লাখ ৯ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ কম। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কমেছে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রবিবার পণ্য রফতানি আয়ের যে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, সেপ্টম্বর মাসে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে পারেনি দেশের তৈরি পোশাক খাত। চলতি অর্থবছরের তিন মাসে ৮০৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ কম। একইসঙ্গে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কমেছে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। এদিকে একক মাস হিসেবে সেপ্টেম্বরে রফতানি আয় অর্জিত হয়েছে ২৯১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
ইপিবি’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে সব ধরনের পণ্য রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫৫০ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষ রফতানি আয় অর্জিত হয়েছে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ৪ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছর প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টম্বর) রফতানির আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৮৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এই তিন মাসে রফতানি আয় এসেছে ৯৬৪ কোটি ৭৯ লাখ ৯ হাজার মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১১ দশমিক ৫ শতাংশ কম।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টম্বর সময়ে রফতানি আয় অর্জিত হয়েছিল ৯৯৪ কোটি ৬ লাখ ডলার। সে হিসাবে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। জানা যায়, দেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এই খাত থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রফতানি আয় এসেছিল ৩ হাজার ৪১৩ কোটি ৩২ লাখ ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে তৈরি পোশাক খাতে পণ্য রফতানি থেকে আয় অর্জিত হয়েছে ৮০৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় এসেছিল ৮১৯ কোটি ১৬ লাখ ডলার। সে হিসেবে এ খাতে প্রবৃদ্ধি কমেছে ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। প্রবৃদ্ধি কমার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি তৈরি পোশাক খাত। লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত তিন মাসে নিট পোশাক রফতানি থেকে আয় এসেছে ৪১৭ কোটি ২ লাখ ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ কম। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ৭ দশমিক ২০ শতাংশ। অন্যদিকে ওভেন পোশাক রফতানি করে আয় হয়েছে ৩৮৮ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ কম। পাশাপাশি ১৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ওভেনে।
এ প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, বর্তমানে পোশাক শিল্পকে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। আমরা এখন শতভাগ কমপ্ল্যায়েন্স কারখানার দিকে হাঁটছি। কিন্তু এ খাতের কিছু সমস্যা বড় আকার ধারণ করছে। তিনি বলেন, ইউরোপের বাজারসহ অন্যান্য দেশের ক্রেতা এবং পণ্যের মূল্য ক্রমাগতভাবে হ্রাস পাচ্ছে। মজুরি, জ্বালানি, পরিবহন ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির ফলে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় ১৭ দশমিক ১১ ভাগ বেড়েছে। এছাড়া প্রতিযোগী দেশের সঙ্গে অস্তিত্ব এবং আমাদের সক্ষমতা টিকিয়ে রাখা এখন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এজন্য রফতানি আয় সামান্য বাড়বে আবার কমবে। বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা ঠিকই পূরণ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ ও লক্ষ্যমাত্রা ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে এ খাত থেকে আয় এসেছে ১৯ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। চলতি অর্থবরের তিন মাসে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ কম প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে। এ খাত থেকে আয় এসেছে ২৫ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রফতানি আয় কমেছে ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গত অর্থবছর জুড়েও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে আয় ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এদিকে গত তিন মাসে প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। এ সময়ে আয় হয়েছে ৩ কোটি ১৫ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ কম। গত তিন মাসে হোম টেক্সটাইল খাতে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা দুটোই কমেছে। এ সময় আয় এসেছে ১৭ কোটি ৯৩ লাখ ডলার ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মাস শেষে কৃষি পণ্য রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা কোনটাই অর্জিত হয়নি। এ খাত থেকে আয় এসেছে ২৬ কোটি ২৫ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রফতানি আয় কমেছে ১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। অন্যদিকে আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমেছে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ।
Posted ১২:১৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed