নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ১৮ মে ২০২০ | প্রিন্ট | 427 বার পঠিত
প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে কেবল সরকারি তহবিলের অর্থ নয়, বেসরকারি অংশগ্রহণও বাড়াতে চায় সরকার। আর সে কারণেই আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) প্রকল্প সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এডিপির খসড়ায় পিপিপি প্রকল্প হিসেবে ৬১টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। চলমান অর্থবছরের পিপিপি প্রকল্পের তুলনায় এই সংখ্যা ২১টি বেশি বলে জানা গেছে।
আগামীকাল (১৯ মে) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠক উপস্থাপন করা হবে নতুন এডিপির খসড়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে পিপিপি’র জন্য নির্ধারিত প্রকল্পের একটি তালিকায়ও অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা সচিব মো. নুরুল আমিন বলেন, সরকার পিপিপিতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। কেননা টেকসই উন্নয়নের জন্য বড় বড় প্রকল্পগুলোতে বেসরকারি অংশগ্রহণ জরুরি। শুধু সরকারি অর্থেই যে অবকাঠামো তৈরি হবে, তা নয়। যেসব প্রকল্প অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক, সেসব প্রকল্প আমরা পিপিপি’র তালিকাভুক্ত করেছি, যেন বেসরকারি উদ্যোক্তারা আগ্রহী হয়ে ওঠেন। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে এসব প্রকল্প এডিপিতে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত পিপিপি প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রকল্প থাকছে পরিবহন খাতের। এর মধ্যে অন্যতম ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, গাবতলী-নবীনগর মহাসড়ককে অ্যাকসেস কন্ট্রোল সড়কে উন্নীত করা, ঢাকা সার্কুলার রুট: দ্বিতীয় অংশ (আব্দুলাহপুর-ধউর-বিরুলিয়া-গাবতলী-বাবুবাজার-চাষাড়া-সাইনবোর্ড) পর্যন্ত ৬৭ কিলোমিটার নির্মাণ, দুই পাশে সার্ভিস লেনসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীত করা এবং দুই পাশে সার্ভিস লেনসহ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ১৩৬ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পগুলো।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এসব প্রকল্প চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতেও অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু ১৯ মার্চ এনইসি বৈঠকে সংশোধিত এডিপি অনুমোদনের পর লকডাউন শুরু হওয়ায় এসব প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি নেই। সে কারণেই আগামী অর্থবছরের এডিপিতে এই প্রকল্পগুলো যুক্ত হতে পারে।
পিপিপিতে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম বলেন, বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার একটি অন্যতম মাধ্যমে হচ্ছে পিপিপিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। চলমান সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় পিপিপিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কেননা এ পদ্ধতিটি প্রকল্পের অর্থায়নে অন্যতম উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে। আগামী ৫ বছরের জন্য তৈরি হতে যাওয়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাতেও পিপিপিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এডিপির বিনিয়োগ প্রকল্পের ৩০ শতাংশ পিপিপিতে বাস্তবায়নের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেটি কার্যকর করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নেওয়া উচিত।
সূত্র জানায়, সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্ব বা পিপিপি উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১০টি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এগুলো হলো- জাতীয় অগ্রাধিকার প্রকল্প বিষয়ক রুলস, পিপিপি সংক্রান্ত সিরিজ প্রশিক্ষণ, বোর্ড অব গভর্নরসের সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, নির্বাহী বোর্ডের সদস্যদের জন্য বিশেষ প্রকল্প রিভিউ সভা, পিপিপি টিএএফ ফান্ডে অর্থ হস্তান্তর, পিপিপি প্রকল্পের জন্য বিশেষ প্রণোদনা, পিপিপি আইন-২০১৫ সংশোধন, বাংলাদেশ জাপান জিটুজি পার্টনারশিপ হালনাগাদকরণ, প্রকল্পের সমন্বয়করণ ও পরিচালণে গুরুত্ব, এডিপিতে ৩০ শতাংশ প্রকল্প পিপিপিতে গ্রহণ এবং জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় পিপিপি অন্তর্ভুক্ত করা।
Posted ১২:৫৬ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৮ মে ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan