শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

বিকল্প বাজেট প্রস্তাব ১২ লাখ কোটি টাকার

বিবিএনিউজ.নেট   |   রবিবার, ২৬ মে ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   435 বার পঠিত

বিকল্প বাজেট প্রস্তাব ১২ লাখ কোটি টাকার

আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য সরকারের খসড়া বাজেটের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি আকারের বিকল্প বাজেট প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। তাদের প্রস্তাব করা বাজেটের আকার ১২ লাখ ৪০ হাজার ৯০ কোটি টাকা। যেখানে সরকার নতুন অর্থবছরে ৫ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে।

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স হলে ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাব ২০১৯-২০’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে এ ধরনের বিকল্প বাজেটের প্রস্তাব দিয়ে আসছে অর্থনীতিবিদদের পেশাদার এ সংগঠন। সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত বিকল্প বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ ও সমিতির সদস্যরা।

সমিতির প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ ২ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট বাজেটের ৮১ শতাংশ জোগান দেবে সরকারের রাজস্ব আয়। বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১৯ শতাংশ। এই ঘাটতি নিজস্ব অর্থায়নে পূরণ করা হবে। অর্থাৎ ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন হবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি, জনপ্রশাসন, পরিবহন ও যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে বরাদ্দ কয়েক গুণ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।

ড. আবুল বারকাত বলেন, আমাদের প্রস্তাবিত বাজেট হলো দ্রুত সম্প্রসারণশীল বৃহদায়তন বাজেট। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের প্রস্তাবিত বাজেট যুক্তিসংগত এবং তা দেশের অর্থনীতির অন্তর্নিহিত শক্তি বিচারেও যৌক্তিক। আয় ও ব্যয়ের কাঠামোগত রূপান্তর, বৈদেশিক ঋণনির্ভরতা কমিয়ে আনা, রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে ধনীদের ওপর চাপ, পরোক্ষ করের চেয়ে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো, মানবসম্পদ উন্নয়ন, শিল্পায়নের ক্ষেত্রে দেশীয় উৎপাদকদের সুযোগ দেয়া আমাদের বাজেটের মূল লক্ষ্য। প্রস্তাবিত ১২ লাখ ৪০ হাজার ৯০ কোটি টাকার বিকল্প বাজেটের অনুন্নয়ন খাতে ব্যয় হবে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। আর উন্নয়ন খাতে যাবে ৭ লাখ ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা।

ড. বারকাত বলেন, আমাদের প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয়ের উৎস হিসেবে ২০টি নতুন উৎস চিহ্নিত করেছি, যা আগে ছিল না। এর মধ্যে অর্থ পাচার রোধ, কালো টাকা উদ্ধার ও সম্পদ কর—এই তিনটি উৎস থেকেই সরকার মোট ৯৫ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় করবে। আর এ টাকা দিয়ে প্রতি বছর তিনটি পদ্মা সেতু করা সম্ভব।

ড. বারকাত বলেন, সমিতির প্রস্তাবিত বাজেট অর্থায়নে কোনো বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন হবে না, প্রস্তাব অনুযায়ী বাজেটের আয় কাঠামোতে মৌলিক গুণগত রূপান্তর ঘটবে। আমাদের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ২ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা, কেউ হয়তো বলবেন অনেক বড় ঘাটতি। এক্ষেত্রে বলতে চাই জাপানে বাজেট ঘাটতি ২৫৬ শতাংশ। আজকের উন্নত দেশের প্রায় সবাই যখন উন্নতি করছিল ১৯৩০-১৯৭০ দশক পর্যন্ত সময়ে তখন তাদের সবারই সরকারি ব্যয় বরাদ্দ ছিল বেশি, প্রবৃদ্ধির হারও ছিল বেশি।

কৃষি ফসলের উৎপাদন অঞ্চল গঠন ও কৃষককে কৃষিপণ্যের ন্যায্য বাজারমূল্য দেয়ার প্রস্তাব করে আবুল বারকাত বলেন, এ বছর বোরো ধানে কৃষকের প্রকৃত লোকসান হবে কমপক্ষে ৫০০ টাকা। এ নিয়ে সরকারের চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। আমরা মনে করি, কৃষককে তার উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্য বাজারমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য জরুরিভাবে কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারিভাবে সংগ্রহের ক্রয়মূল্য উৎপাদন খরচের তুলনায় কমপক্ষে ২০ শতাংশ বাড়াতে হবে, সেক্ষেত্রে এ বছরের বোরো ধানের মণপ্রতি বিক্রয়মূল্য হতে হবে কমপক্ষে ১২০০ টাকা। আর চাল আমদানি একেবারে নিষিদ্ধ করতে হবে। যদি আমদানি করতেও হয় সেক্ষেত্রে সরকারের ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা উচিত।
খেলাপি ঋণ প্রসঙ্গে আবুল বারকাত প্রস্তাব করেন, অভ্যাসগত ঋণখেলাপিদের মোকাবেলার জন্য সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে, তাদের উদ্যমে চালু শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা ঠিক হবে না। সমস্যাটি জটিল তবে সমাধান সম্ভব বলে মনে করি।

পুঁজিবাজার নিয়ে তিনি বলেন, পুঁজিবাজার ধসের পরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ফিরে আসা এখনো দৃশ্যমান নয়। পুঁজিবাজারের প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা বেশ বড় চ্যালেঞ্জ। আর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণকারীর সক্ষমতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আবুল বারকাত বলেন, আমাকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হলে আমি এ বাজেটের প্রস্তাব করতাম। অর্থনীতি সমিতির কর্মকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী কতটুকু সন্তুষ্ট এমন এক প্রশ্নের উত্তরে ড. বারকাত বলেন, কিছু কর্মকাণ্ড অপ্রিয় হলেও তিনি বাধা দেন না। অনেক কিছুই তিনি গ্রহণ করেন। ভাবনার জিনিসগুলো নেন। এগুলো তিনি ভাবেন। তবে সবসময় তা গ্রহণ করতে পারেন না। অনেকেই আমাদের সব প্রস্তাব গ্রহণ করতে দেয় না।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৬ মে ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11390 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।