বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ০২ মার্চ ২০১৯ | প্রিন্ট | 833 বার পঠিত
নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সহজশর্তে ও কমসুদে ঋণ প্রদানের সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করলেও সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। নানা শর্তের বেড়াজালে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোতে নারী উদ্যোক্তা ডেক্স থাকলেও কোনো সহযোগিতা দিচ্ছে না। ফলে ব্যবসা বাণিজ্যে পিছিয়ে যাচ্ছেন নারীরা।
রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম মিলনাতনে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন ওমেন এনটারপ্রিনিওয়ার্স নেটওয়ার্ক ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (ওয়েন্ড)।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে বর্তমানে নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যা সমাধানে বেশকিছু দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ড. নাদিয়া বিনতে আমিন।
ওয়েন্ডের প্রেসিডেন্ট বলেন, সরকার নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সহজশর্তে ও কমসুদে ঋণ প্রদানের নীতিমালা প্রণয়ন করলেও নারী উদ্যোক্তারা এ সুবিধা পাচ্ছেন না। ব্যাংকঋণের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত জটিলতা নানাবিধ শর্তের বেড়াজাল ও উচ্চ সুদের কারণে প্রতিনিয়ত পুঁজি সংগ্রহে হিমশিম খাচ্ছে। এ বিষয়ে বিদ্যমান সরকারের নীতিমালা আরও সহজীকরণের মাধ্যমে তার কার্যকর বাস্তবায়ন চায় নারী উদ্যোক্তারা। স্বল্প সুদে অবাধ পুঁজির প্রবাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের প্রধানতম সংকট নিরসনের জোর দাবি জানান তিনি।
এ ছাড়া বাংলাদেম ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের ঋণসীমা ২৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক কোটি করার দাবি করা হয়। একই সঙ্গে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংকের হেল্প ডেস্কগুলোর কার্যকর করার দাবিও জানান তিনি।
নারী উদ্যোক্তাদের দ্বারা পরিচালিত বছরে ৫০ লাখ টাকা টার্নওভার রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানের শূন্য হারে ভ্যাট অব্যাহতির দাবি জানিয়ে ড. আমিন বলেন, দেশের নারী উদ্যোক্তাদের সিংহভাগই ক্ষুদ্র ও মাঝারি মানের। ফলে উচ্চ হারে ভ্যাট আরোপ করা হলে তারা প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে পারবে না।
নারী উদ্যোক্তাদের এ নেত্রী নতুন ভ্যাট আইনে তিনটি স্তরে সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ হার নির্ধারণের সুপারিশ করেন। এ ছাড়াও আয়করের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য বর্তমানে প্রচলিত করমুক্ত আয় সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িযে ৫ লাখ টাকায় উন্নীত করারও দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ড. নাদিয়া বিনতে আমিন বলেন, বাংলাদেশে কর্পোরেট করহার এশিয়া কিংবা বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে অনেক বেশি। নারী উদ্যোক্তারা এ কারণে বড় ব্যবসায় সম্পৃক্ত হতে পারছেন না। ব্যবসা ক্ষেত্র উদ্যোক্তাবান্ধব না হওয়ায় নারীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহিত করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি কর্পোরেট করহার সবপর্যায় থেকে আগামী তিন অর্থবছরে পর্যায়ক্রমে ৫, ৭ ও ১০ শতাংশ হারে কমানোর প্রস্তাব দেন।
প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে নারীদের জন্য বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি দেশের আটটি বিভাগে নারী উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান ও ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সহযোগিতার জন্য সাপোর্ট সেন্টার করার দাবি জানান এ উদ্যোক্তা। এ ছাড়া সরকার প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন ইকোনমিক জোন, বিসিক শিল্প নগরী, আইটি পার্ক ইত্যাদিতে নারী উদ্যাক্তাদের বিশেষ সুবিধায় প্লট বরাদ্দ চান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি শামীমা লাইজু ও সহ-সভাপতি আয়শা সিদ্দিকা, কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারা সিদ্দিকা, কো-কোষাধ্যক্ষ জর্জিনা আলম, সাধারণ সম্পাদক জিসান আক্তার চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক নাদিরা ইয়াসমিনসহ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
Posted ৩:৩০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০২ মার্চ ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed