বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ১৩ মে ২০১৯ | প্রিন্ট | 517 বার পঠিত
‘অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা’ খাতে আগামী অর্থবছরের জন্য আড়াই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে দুই হাজার কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রতি অর্থবছরে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়। হঠাৎ সৃষ্ট যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার যে বরাদ্দ রাখে সেটিই ‘অপ্রত্যাশিত খাত’ নামে পরিচিত। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক কিংবা রাষ্ট্রীয় যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারও প্রতি অর্থবছরে এ খাতে অর্থ বরাদ্দ রাখে। গত পাঁচ অর্থবছর থেকে এ খাতে দুই হাজার কোটি টাকা করে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে এ খাতে ৫০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে।
সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং আকস্মিক বন্যা মোকাবেলার আগাম প্রস্তুতিস্বরূপ এ খাতে এবার অর্থ বরাদ্দ বাড়তে পারে। তবে বরাদ্দ যা-ই থাক না কেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুরো অর্থ ব্যয় হয়নি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ‘অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা’ খাতে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ব্যয় হয়েছে মাত্র দুই কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে একই পরিমাণ বরাদ্দের বিপরীতে ব্যয় মাত্র ৬০ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাতে একই পরিমাণ বরাদ্দ রাখা হলেও ব্যয় হয়েছে মাত্র ২৯ কোটি টাকা।
গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে একই পরিমাণ বরাদ্দের বিপরীতে ব্যয় হয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। ব্যতিক্রম শুধু চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছর। এ অর্থবছরে অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাতে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৫১৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
অর্থ বিভাগের তৈরি করা ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের ‘অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা’ খাত থেকে ছাড়কৃত অর্থের বিবরণী বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই খাত থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ গেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। মাধ্যমিক ও
উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতায় কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ডের ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত অনিষ্পন্ন আবেদনগুলো নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সম্ভাব্য ৭৫৭ কোটি টাকার মধ্যে অতিরিক্ত ৫০০ কোটি টাকা এ খাত থেকে ছাড় করা হয়েছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ঢাকার টিকাটুলীর ব্যক্তিমালিকানাধীন সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ‘রোজ গার্ডেন’ কেনার জন্য অপ্রত্যাশিত খাত থেকে ছাড় করা হয়েছে ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। জাতীয় নির্বাচনে ৪০ হাজার ১৯১টি ভোটকেন্দ্রে চার লাখ ৮২ হাজার আনসার-ভিডিপি সদস্যকে দায়িত্ব পালনের জন্য অতিরিক্ত ২৪৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া রোমের চ্যান্সারি ভবন ও রাষ্ট্রদূতের বাসভবন কিনতে ১৩৫ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল, লস অ্যাঞ্জেলেসে চ্যান্সারি ভবন কেনার জন্য ৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। পাটকল শ্রমিকদের মজুরি ও বেতন-ভাতা পরিশোধে ১০০ কোটি টাকা, স্থানীয় সরকার বিভাগের দুই প্রকল্পে ৮৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টে ৭৯ কোটি টাকা, সিলেট সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ সুরমায় ন্যাচারাল পার্কে বিভিন্ন রাইড স্থাপন এবং নগরীর যানজট নিরসন ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য অতিরিক্ত ৫৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। ২০টি জেলা শহরে ২০টি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ফায়ার ওয়ার্কস ও লেজার শো অনুষ্ঠানের জন্য অতিরিক্ত ১৫ কোটি টাকাও অপ্রত্যাশিত খাত থেকে দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য অপসারণে ব্যবহৃত গাড়ি কেনার জন্য ৩১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে এ খাত থেকে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়ন পর্যালোচনা শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের ব্যয় নির্বাহের জন্য ৭৬ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে অপ্রত্যাশিত খাত থেকে। এছাড়া মন্ত্রীর পদমর্যাদা পাওয়া সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর ব্যয় ব্যবস্থাপনায় এ খাত থেকে ২০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
Posted ৩:৪২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৩ মে ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed