বিবিএনিউজ.নেট | শুক্রবার, ২৮ জুন ২০১৯ | প্রিন্ট | 634 বার পঠিত
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নির্ধারিত ভ্যাট-ট্যাক্সহার সংস্কারে ২০টি প্রস্তাব দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)। প্রস্তাবগুলোর প্রতিফলন ছাড়াই যদি সংসদে বাজেট পাস হয়ে যায়, তার পরও বিবেচনার সুযোগ রয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘জাতীয় বাজেট ও অর্থবিল ২০১৯-২০ প্রস্তাবনা’ শীর্ষক কনফারেন্সে এ কথা বলেন মন্ত্রী। এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সিদ্দিকুর রহমান, বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য উন্নত দেশ গড়া। তাই বড় খরচের বাজেট দেয়া হচ্ছে। এজন্য রাজস্ব আয় বাড়াতে কিছু জায়গায় ভ্যাট-ট্যাক্সের হার বেড়েছে। জাতীয় সংসদে কোনো পরিবর্তন ছাড়াই যদি বাজেট পাস হয়ে যায়, তাহলেও পরবর্তীতে আলোচনা করে ভ্যাট-ট্যাক্স কমানোর সুযোগ রয়েছে। তাই ব্যবসায়ীদের হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এ সময় কালো টাকার প্রসঙ্গ তুলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বৈধ পথে অর্জিত অপ্রদর্শিত অর্থকে কালো টাকা বলা ঠিক না। একে অপ্রদর্শিত অর্থ বলা উচিত।
এবারের বাজেটে ১০ শতাংশ কর দিয়ে কোনো প্রশ্ন ছাড়া জমি ও ফ্ল্যাট কেনা এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে অর্থ বিনিয়োগ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে আমার একটা সাজেশন আছে। সেটা হলো, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অপ্রদর্শিত আয়ের ওপর কর আরো সুনির্দিষ্ট করতে হবে। অর্থনৈতিক জোনগুলোয় বিনিয়োগের সুযোগ আরো প্রসারিত হতে পারে। যে কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান বেশি লোকের কর্মসংস্থান করবে, তার ক্ষেত্রে করহার আরো কমানো যেতে পারে।
তিনি বলেন, আমি সংসদেও এ কথা বলেছি। আমার সঙ্গে অনেকে হয়তো একমত হবে না। কিন্তু আমাদের এখন এগিয়ে যাওয়ার সময়। অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ না দিলে টাকা দেশে থাকবে না। উন্নতির একটা পর্যায়ে গিয়ে এ সুযোগ বন্ধ করা যেতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আমরা চাই দেশের টাকা যেন দেশের বাইরে না যায়। যেভাবেই হোক টাকা দেশে থাকুক। এ সুযোগ দেয়ার পর যতটুকু টাকা বিনিয়োগ হবে ততটুকুই লাভ।
এনবিআরের হয়রানি নিয়ে ব্যবসায়ীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীদের যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হতে না হয়, আমাদের সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এফবিসিসিআইয়ের বাজেট-পরবর্তী ২০টি প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে শিল্পের কাঁচামাল ও মূলধনি যন্ত্রপাতি থেকে আগাম কর প্রত্যাহার, কোম্পানির করপোরেট করহার ২ দশমিক ৫০ শতাংশ কমানো, তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের মতো অন্যান্য রফতানি খাতেও একই হারে করপোরেট করহার করা, স্টক লভ্যাংশের কর প্রত্যাহার, রিটেইনড আর্নিংস ও রিজার্ভের কর প্রত্যাহার, জোগানদারের ক্ষেত্রে ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ করা, উৎসে কর কর্তনকারী সত্তা বা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভারের সীমা ১ কোটি টাকার পরিবর্তে ৩ কোটি টাকা করা, কর কর্মকর্তার জব্দকরণ ও আটক করার স্বেচ্ছাক্ষমতা ও ব্যাংক হিসাব জব্দ করার ক্ষমতা বাতিল, ১৫ শতাংশের কম ভ্যাট প্রদানকারীর ক্ষেত্রে উপকরণ কর রেয়াত নেয়ার সুযোগ, ভিন্ন কারখানায় একই ধরনের ব্যবসার পৃথক নিবন্ধনের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের বিধান করা, আপিলের প্রতি স্তরের পরিবর্তে শুধু প্রথম স্তরে দাবির ১০ শতাংশ জমা দেয়া।
এছাড়া বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক তৈরি পোশাকে নিরীক্ষা প্রতিবেদন ছাড়া প্রণোদনা সহায়তা দেয়ার দাবি জানান। স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনোয়ার হোসেন ইস্পাত খাতে বিশেষ সুবিধা দেয়ার দাবি জানান।
কনফারেন্সে বিভিন্ন জেলা চেম্বারের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। তবে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া উপস্থিত থাকার কথা থাকলে তারা ছিলেন না।
Posted ২:২১ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৮ জুন ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed