বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট | 469 বার পঠিত
ঋণখেলাপির তথ্য গোপন করায় জরিমানার কবলে পড়েছে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এসবি গ্রুপের কর্ণধার শাহজাহান বাবুল দীর্ঘদিন ধরে খেলাপি হলেও সেই তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিআইবিতে দাখিল করেনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের মামলা চলমান। এর মধ্যে শীর্ষ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী হিসেবে অর্থমন্ত্রীর কাছে অ্যাওয়ার্ড নেন বাবলু। এতে সমালোচনার মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে বাধ্য হয়ে রেমিট্যান্স পদক ফিরিয়ে নেয়া হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, যদি বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক যথাসময়ে সঠিক নিয়মে ঋণখেলাপির তথ্য জানাত তাহলে পদক নিয়ে এ অবস্থা সৃষ্টি হতো না। তাই তথ্য গোপন করার দায়ে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংককে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে ব্যাংকটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জরিমানা কমিয়ে দুই লাখ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু জরিমানার টাকা পুরোপুরি মওকুফের জন্য ফের আবেদন করেছে কমার্স ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সূত্র জানায়, জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন করার এখতিয়ার রয়েছে। তবে এটি বিবেচনার অধিকার শুধু পরিচালনা পর্ষদের হাতে। তাই তার বিষয়টি পরিচালনা পর্ষদের সভায় পাঠানো হবে। বোর্ড মওকুফ না করলে তাকে আবার চিঠি দিয়ে জরিমানা প্রদানে নির্দেশ দেয়া হবে। স্বেচ্ছায় জরিমানা না দিলে তার অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ কেটে নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক জরিমানা মওকুফের আবেদনে উল্লেখ করেছে, এটি তাদের অনিচ্ছাকৃত ভুল। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত এমন ১১ জন সাময়িক বরখাস্তসহ অন্যান্য শাস্তি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সাবেক এমডিসহ বর্তমান ডিমডি ও সিনিয়র কর্মকর্তাও রয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আব্দুল খালেক খান বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বিস্তারিত কাগজপত্র আমরা দাখিল করেছি। আশা করছি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের জরিমানা মওকুফ করে দেবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শাহজাহান বাবলু বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের শীর্ষ ঋণখেলাপি। তার কাছে ব্যাংকের পাওনা ১৮৪ কোটি টাকা। তিনি কমার্স ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাচার করেছেন এবং জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে টাকা এনেছেন। ইতোমধ্যে অর্থপাচারের অভিযোগে শাহজাহান বাবলুকে প্রধান আসামি করে মামলাও করেছে সিআইডি। এ অভিযোগে তাকে দেয়া রেমিট্যান্স পদক ফিরিয়ে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের ৯ অক্টোবর এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জনতা ব্যাংকের এমডির কাছে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চিঠিতে শাহজাহান বাবলুকে দেয়া রেমিট্যান্স ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও স্মারক মুদ্রা দ্রুততম সময়ে ফিরিয়ে দিতে জনতা ব্যাংককে নির্দেশনা দেয়া হয়।
এদিকে রেমিট্যান্স পদক দেয়ার আগেই বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ঋণখেলাপি হিসেবে শাহজাহান বাবলুর নাম প্রকাশ করা হয়। এরপরও শাহজাহান বাবলুকে পদক দেয়া হয়। তবে পদক প্রদানে দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
ব্যাংকিং চ্যালেনে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানো ৩৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাঁচ ক্যাটাগরিতে দেয়া হয় এ পুরস্কার। জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় আনায় শাহজাহান বাবলুকে রেমিট্যান্স পদক দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
Posted ১:০০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed