বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট | 373 বার পঠিত
বরাবরের মতোই বিদায়ী বছরেও রাজস্ব আদায় এবং করফাঁকি রোধে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই পদক্ষেপগুলোর একটি আধুনিক প্রযুক্তির ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি)। যা মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ফাঁকি রোধ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তা আদায় সহজ করতে চালু করা হয়েছে।
গত ২৫ আগস্ট ঢাকার ৮০টি ও চট্টগ্রামের ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলকভাবে ইএফডি মেশিন বসানোর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ইএফডি যুগে প্রবেশ করে এনবিআর। চার মাসের ব্যবধানে এর সংখ্যা প্রায় এক হাজার হয়েছে।
ডিসেম্বরে ভ্যাট দিবসের এক অনুষ্ঠানে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম জানান, ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মল ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এবং চট্টগ্রামের প্রায় এক হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসানো হয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে ১০ হাজার ও পর্যায়ক্রমে দেশের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এই ইএফডি যন্ত্র বসানো হবে।
এনবিআর বলছে, ইএফডি হচ্ছে আধুনিক হিসাবযন্ত্র। এটি ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টারের (ইসিআর) উন্নত সংস্করণ। এ যন্ত্র বসানোর মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত লেনদেন বা বিক্রির তথ্য জানতে পারবে এনবিআর। এর মধ্যে কত অংশ ভ্যাট তা জানা যাবে। ফলে ভ্যাট ফাঁকি বন্ধ হবে এবং আদায় বাড়বে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিদিনের লেনদেনের তথ্য তদারকিতে রাজস্ব বোর্ডের সার্ভারের সঙ্গে সফটওয়্যারের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকবে ইএফডি মেশিন। সার্ভার ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে।
এনবিআর আরও বলছে, এই ইএফডি যন্ত্রের মাধ্যমে বিক্রেতা তার বিক্রি হওয়া পণ্যের হিসাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানতে পারবেন। পাশাপাশি জনগণও ভ্যাট দিয়ে নিশ্চিত হবেন যে, তার প্রদত্ত ভ্যাট সম্পর্কে এনবিআর ওয়াকিবহাল। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়বে।
স্বর্ণের দোকান, হোটেল, রেস্তোরাঁ, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরসহ ২৫ সেবা খাতে ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ব্যবসায়ীদের এই যন্ত্র ব্যবহারে উৎসাহিত করতে প্রথম পর্যায়ে বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের এই যন্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ জন্য দেয়া হচ্ছে। যন্ত্রে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে, ইএফডি যন্ত্রের মাধ্যমে কেনাকাটায় ক্রেতাদের আগ্রহী করতে লটারির ব্যবস্থা করেছে এনবিআর। নতুন বছরের জানুয়ারি মাসে ইএফডি যন্ত্রের মাধ্যমে কেনাকাটা করে এই লটারিতে অংশ নেয়া যাবে। আর সেই লটারির ড্র ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে বলে গত ১২ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
তিনি জানান, এই লটারিতে মোট ১০১টি পুরস্কার থাকবে। এর মধ্যে প্রথম পুরস্কার হবে এক লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা (৫টি)। এভাবে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত মোট ১০১টি পুরস্কার থাকবে। এই পুরস্কারের টাকাও সম্পূর্ণ আয়করমুক্ত হবে। ইএফডি থেকে পণ্য কেনার পর গ্রাহকরা যে রসিদ পাবেন তা-ই লটারির কুপন হিসেবে গণ্য করা হবে।
এনবিআর আরও জানিয়েছে, গ্রাহক পর্যায়ে ভ্যাট আদায় ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএফডিএমএস) প্রবর্তন করা হয়েছে।
Posted ৩:১০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed