বিবিএ নিউজ.নেট | শনিবার, ০১ জানুয়ারি ২০২২ | প্রিন্ট | 203 বার পঠিত
স্টিল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ফাঁকির তথ্য পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার এ ঘটনার পর তাদের বকেয়া ভ্যাটের টাকা উদ্ধার করে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে। ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিএসআরএম গ্রুপ চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে অবস্থিত। এই গ্রুপের ভ্যাট ফাঁকি দেয়া প্রতিষ্ঠান হলো বিএসআরএম স্টিল মিলস লিমিটেড এবং বিএসআরএম স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, তদন্তের সময় বিএসআরএম গ্রুপ যে পরিমাণ ব্যবসা করেছে, ভ্যাট রিটার্নে তার চেয়ে কম দেখিয়েছে। অর্থাৎ বিক্রির তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
তদন্তকালে বিএসআরএম গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে ফাঁকির তথ্য জানা হয়। ভ্যাট গোয়েন্দা অফিসের উপপরিচালক মুনাওয়ার মুরসালীনের নেতৃত্বে একটি দল প্রতিষ্ঠান দুটির তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে।
কর্মকর্তারা জানান, বিএসআরএম স্টিল মিলস লিমিটেডের ২০১৬-এর জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত ভ্যাটের তথ্য তদন্ত করা হয়। এতে বিভিন্ন সেবার বিপরীতে উৎসে ভ্যাট বাবদ ২৮ কোটি ৩৬ লাখ ১৪ হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে ২১ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা।
এ ক্ষেত্রে প্রায় ৭ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদ্ঘাটন করা হয়। যথাসময়ে ভ্যাট পরিশোধ না করায় জরিমানা হিসেবে অতিরিক্ত ২ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য। যার পরিমাণ ২ কোটি ২০ লাখ টাকা।
তদন্তে দেখা যায়, বিএসআরএম স্টিল মিলস লিমিটেড স্থান ও স্থাপনার ভাড়ার বিপরীতে ৯৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রযোজ্য ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির ২৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদ্ঘাটন করা হয়। যথাসময়ে সরকারি কোষাগারে ভ্যাট জমা না দেয়ায় জরিমানা হিসেবে অতিরিক্ত ২ শতাংশ হারে ভ্যাট আসে ১০ লাখ টাকা।
অন্যদিকে বিএসআরএম স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের ২০১৬-এর জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত বিভিন্ন সেবার বিপরীতে উৎসে ভ্যাট বাবদ ১১ কোটি ৭১ লাখ টাকা ভ্যাট দেয়ার কথা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি পরিশোধ করেছে ৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে ফাঁকি বের করা হয় প্রায় ৩ কোটি টাকা। নিয়মিত পরিশোধ না করায় জরিমানা হিসেবে অতিরিক্ত ২ শতাংশ হারে ভ্যাট আসে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা।
এ ছাড়া তদন্ত মেয়াদে বিএসআরএম স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড স্থান ও স্থাপনার ভাড়ার বিপরীতে ৩৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকার ভ্যাট পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির ভ্যাট দেয়ার কথা ৪২ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ৭ লাখ ১৮ হাজার টাকা। এই ভ্যাটের ওপর জরিমানা হিসেবে অতিরিক্ত ২ শতাংশ হারে ভ্যাট আসে ২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।
তদন্তে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠান দুটির মোট ফাঁকি দেয়া ভ্যাটের পরিমাণ ৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং সুদ বাবদ আসে ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ১৩ কোটি ২৯ লাখ ৮৬ হাজার ৫৩২ টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদ্ঘাটন করা হয়।
ভ্যাট নিরীক্ষা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, ‘বিএসআরএম গ্রুপ কর্তৃপক্ষ তাদের ভুল স্বীকার করেছে। তারা তদন্ত মেয়াদে ফাঁকি দেয়া সমুদয় ভ্যাট স্বপ্রণোদিত হয়ে স্বেচ্ছায় সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে।’
Posted ৩:৪২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০১ জানুয়ারি ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy