নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৬ মার্চ ২০২২ | প্রিন্ট | 197 বার পঠিত
বিদেশে অর্থপাচারকারীদের বিষয়ে গঠিত মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে মনিটরিং কমিটিতে সিআইডি, দুদক এবং বিএফআইইউ’র সঙ্গে এনবিআরকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার (৬ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বিদেশে অর্থপাচারে জড়িতদের মধ্যে পানামা পেপারস ও প্যারাডাইস পেপারসে প্রকাশিত ব্যক্তিদের বিষয়ে গৃহিত পদক্ষেপের নিয়ে তৈরি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। এই প্রতিবেদন দাখিলের পর আদালত এই আদেশ দেন।
আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। তিনি জানান, রোববার আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সিআইডি, দুদক এবং বিএফআইইউ’র সমন্বয়ে ৭ সদস্যবিশিষ্ট মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দাখিল তদন্তÍ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কমিটি গঠনের পর যৌথভাবে কাজ চলছে। এর মধ্যে কমিটির অধীনে ছয়টি অনুসন্ধান দল কাজ করছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে এই কমিটির সঙ্গে এনবিআরকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। কমিটিকে আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এদিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল কাইয়ুম খান ও অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী দাস।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি শেষে বিদেশে অর্থপাচারে জড়িতদের মধ্যে পানামা পেপারস ও প্যারাডাইস পেপারসে প্রকাশিত ব্যক্তিদের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চান হাইকোর্ট। ৬ মার্চের মধ্যে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
একইসঙ্গে সুইস ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের মাধ্যমে কারা এবং কত টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। কোন ব্যাংকে জমা আছে, তাদের তালিকা হাইকোর্টে জমা দিতে বলেছেন আদালত। ৬ মার্চের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ রোবাবর এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
অর্থপাচারকারী ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের তথ্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২৬ জানুয়ারি প্রতিবেদন আকারে জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে ৬৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের তালিকা এবং এর মধ্যে ১০ ব্যক্তি-পরিবারের বিষয়ে গৃহীত ব্যবস্থার তথ্য উল্লেখ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ জানুয়ারি এ বিষয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে শুনানি হয়।
হাইকোর্টে দেওয়া তালিকায় নাম রয়েছে আব্দুল আউয়াল মিন্টুর দুই ছেলের। তাদের মধ্যে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীও রয়েছেন। এর আগে ১২ ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩১০ কোটি ৮০ লাখ ১৪ হাজার ৭৪৮ টাকা বিদেশে পাচারের তথ্য দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বাংলাদেশ থেকে বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংক বিশেষ করে সুইস ব্যাংকসহ সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, দুবাই ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে যেসব অর্থপাচার হয়েছে তার তথ্য নিয়ে সিআইডি প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল। গত ১৭ অক্টোবর হাইকোর্টকে এ তথ্য জানানো হয়। পরে আরও সময় নেয় বিএফআইইউ এবং দুদক। এরই ধারাবাহিকতায় বিএফআইইউ হাইকোর্টে এ প্রতিবেদন জমা দেয়।
এর আগে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্সে নাম আসা অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও সিআইডিকে তা জানাতে বলা হয়। এরপর গত ৫ ডিসেম্বর পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্সে নাম আসা অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা পৃথক দুটি প্রতিবেদনে হাইকোর্টে দাখিল করে দুদক।
Posted ৫:৫৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৬ মার্চ ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy