রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ১ বছরে বেড়েছে ৫৫ শতাংশ

আদম মালেক   |   সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২   |   প্রিন্ট   |   197 বার পঠিত

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ১ বছরে বেড়েছে ৫৫ শতাংশ

ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। খেলাপির ভারে ন্ব্যূজ হয়ে পড়ছে প্রতষ্ঠিানগুলো। ১ বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে ২০২২ সালের জুন শেষে দেশে ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা। ২০২১ সালের এই সময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠারগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ নানা অনিয়ম। গত কয়েক বছরে কিছু প্রতিষ্ঠানে ঋণ জালিয়াতির নানা ঘটনা উদ্ঘাটিত হয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠানে অনিয়মের সঙ্গে আর্থিক অপরাধে অভিযুক্ত পি কে হালদারের সম্পৃক্ততা ছিল। অনিয়মের কারণে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমানতের মেয়াদপূর্তিতে টাকা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে এ নিয়ে আমানতকারীরা অভিযোগ করেছেন। অন্য কোনো কারণ আছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনার কারণে ২০২০ ও ‘২১ সালে ঋণ আদায়ে বেশ শিথিলতা ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেই নির্দেশনা ছিল- কোনো গ্রাহক যদি করোনার প্রভাবে যথাসময়ে ঋণ পরিশোধ করতে না পারে, তাহলে তার ঋণ যাতে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ২০২২ সালে এসে তা আরও শিথিল করা হয়েছে। এর প্রভাবে খেলাপি ঋণ বাড়তে পারে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নামে-বেনামে বের করে নেয়া হয়েছে প্রচুর অর্থ, যা ফেরত আসেনি। আবার গ্রাহকের টাকাও ফেরত দিতে পারছে না অনেক প্রতিষ্ঠান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্বল নজরদারির কারণে এ খাতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের ঋণ স্থিতি ছিল ৬৯ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। এরমধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৫ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা, যা মোট স্থিতির ২২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এর মধ্যে ১০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ খেলাপির পরিমাণ ১১ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা, যা এই খাতের মোট ঋণ খেলাপির ৭৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এরমধ্যে শুধু ৩ প্রতিষ্ঠানের খেলাপি দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১১৯ কোটি টাকা। যা এই খাতের মোট খেলাপির ৩৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (এপ্রিল-জুন) শেষে সবচেয়ে বেশি ঋণ খেলাপি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল)। প্রতিষ্ঠানটির ঋণ খেলাপির পরিমাণ ৩ হাজার ১৫১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এরপর রয়েছে ফাস (এফএএস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট। প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭২০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ১ হাজার ২৪৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ঋণ খেলাপি নিয়ে তিনে রয়েছে উত্তরা ফাইন্যান্স লিমিটেড। এছাড়া প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেডের ঋণ খেলাপির পরিমাণ ৯১৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) ৯১৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টম্যান্ট লিমিটেডের ৮৮১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, আভিভা ফাইন্যান্স লিমিটেডের (সাবেক রিলায়েন্স ফাইন্যান্স) ৮৫৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, ফার্স্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টম্যান্ট লিমিটেডের ৮২০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) ৭৫৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ঋণ খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৩৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

বেসরকারি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, হাতে গোনা কিছু প্রতিষ্ঠানের কারণে এ খাতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থা খারাপ নয়। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান অনেক ভালো করছে। সুশাসনের অভাবে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে পিপলস লিজিং ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি মনে করেন, যেসব প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ঋণ বিতরণ করেছে কিংবা ঋণ বিতরণে কর্মকর্তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেননি, তাদের অবস্থা খারাপ হয়েছে।

 

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:৫১ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11396 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।