বিবিএনিউজ.নেট | বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট | 632 বার পঠিত
চলতি (২০১৮-১৯) অর্থবছরের তিন প্রান্তিকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অর্ধেকও বাস্তবায়ন হয়নি। অর্থবছরের জুলাই-মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে এডিপির ৪৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। যদিও গত অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের এ হার আরো কম ছিল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বাস্তবায়ন হয়েছিল এডিপির ৪৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছর এডিপি বাস্তবায়নের হার বেড়েছে ১ দশমিক ৫৯ শতাংশীয় পয়েন্ট। একই সময়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর অর্থ ব্যয়ের পরিমাণও বেড়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সভাকক্ষে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সংবাদ সম্মেলনে এডিপি বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। আইএমইডি সচিব আবুল মনসুর মো. ফায়জুল্লাহ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এডিপি বাস্তবায়নের হার বেড়েছে জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ পর্যন্ত সময়ে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বেশ ভালো অগ্রগতি হয়েছে। গত নয় মাসে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো খরচ করতে পেরেছে মোট ৮৩ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে খরচ হয়েছিল ৭১ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। এ হিসাবে গত অর্থবছরের তুলনায় অর্থ ব্যয় অনেক বেড়েছে। আশা করছি, এ অর্থবছর সংশোধিত এডিপির কাঙ্ক্ষিত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
চলতি অর্থবছরের মূল এডিপি থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করে সংশোধিত এডিপি সম্প্রতি অনুমোদন হয়। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার অর্থায়ন ছাড়া সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। মূল এডিপিতে বরাদ্দ ছিল যেখানে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৯ হাজার কোটি টাকা বাদ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে সরকারি তহবিল থেকে অতিরিক্ত ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৩৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। এ হিসাবে গত মার্চে এডিপির প্রায় ৮ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।
গত মাসে এডিপি বাস্তবায়নে এগিয়ে থাকা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে আছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পরিবেশ-বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
সরকারের নানা উদ্যোগের মাধ্যমে এডিপি বাস্তবায়নের হার বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে বৈঠক ও পরিদর্শন শুরু করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এরই মধ্যে সিলেট ও খুলনা বিভাগে প্রকল্প পরিচালকদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। একজন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) একাধিক প্রকল্পে পিডি হিসেবে থাকতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোথাও থাকতে হলে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া এখনো যারা আছেন তাদের অনুমতি কিংবা ব্যাখ্যা দিতে হবে। প্রকল্পের কাজে গতি আনতে প্রয়োজনে বিভিন্ন স্তর সংক্ষিপ্ত করার কথাও বলা হচ্ছে।
এমএ মান্নান বলেন, এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হার সন্তোষজনক। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো গুরুত্বসহকারে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দুই-একটি প্রকল্প এখনো পিছিয়ে রয়েছে। সেগুলোয় গতি আনার চেষ্টা চলছে। কোনোভাবেই প্রকল্প বাস্তবায়নে পিছিয়ে পড়ার সুযোগ নেই। সামনের দিনে প্রকল্প বাস্তবায়ন মানে ও পরিমাণে বাড়াতে চাই।
উল্লেখ্য, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে সমাপ্তির জন্য প্রকল্পের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫টি। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ৩২৮ ও কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ১৭টি। মূল এডিপিতে ৪৪৬টি প্রকল্প রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ছিল ৪৩০ ও কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ১৬টি।
Posted ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed