বিবিএনিউজ.নেট | বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০১৯ | প্রিন্ট | 528 বার পঠিত
দেশের তৈরি পোশাক, সোয়েটার, ডায়িং, নিটিং ও টেক্সটাইল তথা বস্ত্র খাতে ঋণের অর্ধেকের বেশি বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণ। প্রায় ১৬ শতাংশ বিদেশী ঋণ নিয়েছে প্লাস্টিক, সার্ভিস ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাত। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) ‘প্রাইভেট কমার্শিয়াল বরোয়িং ফ্রম ফরেন সোর্সেস ইন বাংলাদেশ: অ্যান অ্যানাটমি’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘বিআইবিএম রিসার্চ অ্যালমানাক-২০১৯’ অনুষ্ঠানে এ গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএমের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এসএম মনিরুজ্জামান। বিআইবিএমের ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন ও পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী। অনুষ্ঠানে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট মোট ১৯টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। তিনটি টেকনিক্যাল সেশনের মাধ্যমে এসব গবেষণাপত্র নিয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত বিদেশী ঋণসংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাত রফতানির সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় বস্ত্র খাতের বিদেশী ঋণ পরিশোধের ঝুঁকি কিছুটা কম। সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুৎ খাতেও বিদেশী ঋণ নেয়া হচ্ছে। সুদসহ এ ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। কারণ বিদ্যুৎ খাতের আয় বৈদেশিক মুদ্রায় অর্জিত হয় না। বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণে এ ধরনের আরো কিছু ঝুঁকি থাকায় ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে আরো সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, বিশ্বব্যাপী আর্থিক খাতে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা থাকায় ঝুঁকি অনেক কম। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আর্থিক খাত আরো যেন অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়, সেদিকে নজর দেয়া হচ্ছে।
বিআইবিএম রিসার্চ অ্যালমানাকের অংশ হিসেবে আয়োজিত প্রথম টেকনিক্যাল সেশনে ‘আইটি সিকিউরিটি অব ব্যাংকস ইন বাংলাদেশ: থ্রেটস অ্যান্ড প্রিপেয়ার্ডনেস; প্রডাক্ট ডাইভার্সিফিকেশন অব ইসলামিক ব্যাংকস: প্রসপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’সহ কয়েকটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ড. বরকত-এ-খোদা। তিনি বলেন, ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাতের বিভিন্ন বিষয়েও বিআইবিএম গবেষণা করছে, যা এ খাতের লিডারশিপ এবং গভর্ন্যান্সের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
এ সেশনের আলোচনায় অংশ নিয়ে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, ঝুঁকির কারণে বিদেশী ঋণ পরিশোধে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য বিদেশী ঋণ গ্রহণে আরো সতর্ক হতে হবে। এমনকি এ ঋণ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভেও চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
‘ইন্টারনাল অডিট অ্যান্ড পারফরম্যান্স অব ব্যাংকস ইন বাংলাদেশ; মানি লন্ডারিং ভালনারেবিলিটিজ ইন পেমেন্ট সিস্টেমস: বাংলাদেশ কনটেক্সট’সহ কয়েকটি গবেষণা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সেশনে সভাপতিত্ব করেন সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএ চৌধুরী। ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে তিনি ব্যাংকারদের ঋণ প্রদানে আরো সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী এ সেশনে আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, ব্যাংকারদের প্রশিক্ষণে আরো গুরুত্ব দিতে হবে। এটিকে ব্যয় বিবেচনা না করে বিনিয়োগ হিসেবে ভাবতে হবে।
অনুষ্ঠানের শেষ সেশনে ‘ডেভেলপমেন্ট অব বন্ড মার্কেট ইন বাংলাদেশ; কস্ট ফর কমপ্লায়েন্স উইথ রেগুলেশনস ইন ব্যাংকস’সহ বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। এ সেশনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
Posted ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed