নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ২৬ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট | 119 বার পঠিত
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকালে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বিআইএ’র প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব শেখ মোহাম্মদ সলিমুল্লাহ, বিশেষ অতিথি ছিলেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী। সভায় আইডিআরএ’র সদস্যবৃন্দসহ বিভিন্ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, পরিচালকবৃন্দ এবং মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বলেন, আজকে যদি আমরা বঙ্গবন্ধুকে লালন না করি, তাকে যদি চর্চা না করি। তাকে যদি আলোচনা কেন্দ্রবিন্দুতে না রাখি। তাহলে জাতির পিতার বিষয়টি আমাদের ভেতরে গ্রোথিত হবে না। আমরা আমাদের জাতিকে বুঝতে পারব না। আমাদেরকে বুঝতে পারব না। দেশকে বুঝতে পারব না। দেশের উন্নয়ন কখনো তাকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। সে জন্য বঙ্গবন্ধুকে লালন করা আমাদের জন্য খুবই জরুরি, খুবই প্রয়োজন। তিনি বলেন, আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নিঃশেষ করা যায়নি। বঙ্গবন্ধু এখন আমাদের মাঝে আছেন। তিনি চির ভাস্কর। তিনি দেদীপ্যমান। তিনি আমাদের ভেতরে, আমাদের অন্তরে, আমাদের সর্বোত্র বিরাজমান। তাই আমি বলতে চাই, সূর্য কখনো ডুবে না; কেবল ডুবে যাই আমরা। হারিয়ে যাই সূর্যের আড়ালে।
শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু সূর্যের মতো দেদীপ্যমান, উজ্জ্বল আমাদের সবার হৃদয়ে। তিনি চির জাগরুক। তিনি বাঙালি জাতির পিতা। তিনি সর্বক্ষণ আমাদের সাথে থাকবেন, আছেন। তিনি আমাদের নির্দেশনা দিয়ে যাবেন। আমরা তাকে অনুসরণ করব সহযোদ্ধা হিসেবে। দেশটাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব উন্নতির দিকে। তিনি বলেন, আমরা ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি। ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা এসডিজি’র সকল লক্ষ্য বাস্তবায়ন করব। আমরা ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হব। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু আজীবন লালন করেছেন একটি উন্নত দেশ। তিনি হৃদয়ে ধারণ করতেন শুধু বাংলাদেশকে এবং একটি সুখী সমৃদ্ধ সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার তিনি স্বপ্ন দেখতেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে চলেছি। শুধু আজকের দিনে আমাদের হৃদয়ে রাখতে হবে এই জিনিস যে, বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে রাখব, তার সোনার বাংলাদেশকে আমরা হৃদয়ে লালন করব এবং সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, ১৫ আগস্ট বাঙালী জাতির জন্য একদিকে যেমন বেদনা ও শোকের অন্যদিকে কলঙ্কের দিবসও। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন একটি নৃশংসতম হত্যাকান্ড ঘটেছিলো যেখানে শুধু একজন সরকার প্রধানকেই হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছে এমন একজনকে যিনি তার জাতিকে স্বাধীনতা দিয়েছেন। হাজার বছরের শোষিত, বঞ্চিত, আত্মপরিচয়হীন একটি জাতিকে স্বাধীনতার মাধ্যমে আত্মপরিচয় দিয়েছেন। তাকেই হত্যা করেছে তার স্বজাতির কিছু লোক, এটা শুধু একটি হত্যাকান্ডই নয় এর পেছনে ষড়যন্ত্রও ছিলো।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, মানুষের মনে স্বাধীনতার ইচ্ছা জাগিয়েছেন, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে যখন স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন তখন লক্ষ কোটি বাঙালি তার সেই ডাকে উজ্জীবিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ১৯৭১ সালে ৯ মাস তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী ছিলেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ চলেছে তাঁরই নামে। মুক্তিযোদ্ধারা একটি জিনিস জানতো যে, শেখ মুজিবের জন্য যুদ্ধ করছি। তিনি বলেন, তৎকালীন সরকার গঠিত হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে প্রধান করে। আর বঙ্গবন্ধুকে সরকার প্রধান করে সরকার গঠিত হয়েছিল বলেই বিশ্ব এই সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ভারত আমাদেরকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছিল। সারা পৃথিবী থেকে মানুষ সেই সরকারকে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সহযোগিতা করেছিল। বঙ্গবন্ধুর সাফল্য এখানেই।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ কবির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর অগাধ বিশ্বাস ছিল বাঙালিদের ওপর। আর এই সুযোগটি গ্রহণ করেছে সাম্রাজ্যবাদ। রাজাকাররা আসলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাহস পেত না। যদি কেউ রাজাকারদের সাহস না দিত। এই সাহসটা যুগিয়েছে সাম্রাজ্যবাদ। এর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন পৃথিবী দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে-শোষিত ও শাসিত। আমি শোষিতদের পক্ষে। অর্থাৎ যারা শোষিত হচ্ছে, বঞ্চিত হচ্ছে, লাঞ্ছিত হচ্ছে, স্বাধীনতাকামী- আমি তাদের পক্ষে। এই ধরণের একটা হুংকার পেয়েছিল সাম্রাজ্যবাদ। এতো বড় সাহস-সামান্য একটা বাংলাদেশ, এই দেশের নেতা এ ধরণের কথা বলে; এটাতে তারা (সাম্রাজ্যবাদ) চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। এ জন্য তারা রাজাকারদের সাহস যুগিয়েছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আলোচনা করলে দিনের পর দিন আলোচনা করা যাবে কিন্তু এক কথা দু’বার বলার প্রয়োজন হবে না। প্রতিটি আলোচনাতেই বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নতুন কিছু পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বীমা পরিবারের। এই পরিবার রক্তের নয়। এই পরিবার আত্মার। আর আত্মার পরিবার হয় রক্তের পরিবারের চেয়ে শক্তিশালী।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহমদ, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান ফরিদুর নাহার লাইলী, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মোজ্জাফর হোসেন পল্টু, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান ও বিআইএ’র প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন আহমেদ পাভেল প্রমুখ।
Posted ৫:০৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৬ আগস্ট ২০২৩
bankbimaarthonity.com | rina sristy