নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ২৫ আগস্ট ২০২১ | প্রিন্ট | 728 বার পঠিত
দেশীয় মালিকানাধীন বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্যবসা ও সম্পদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকা ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে আবারো নিরীক্ষক পরিবর্তন করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। তবে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে বীমা আইন মেনেই এই পরিবর্তন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, বীমা আইন, ২০১০-এর ৪৮ ধারা মোতাবেক ফারইস্ট ইসলামী লাইফে নিরীক্ষা চালাতে গত ২৩ ডিসেম্বর একটি চিঠি ইস্যু করে আইডিআরএ। নিরীক্ষা চালাতে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফার্ম মেসার্স রহমান মোস্তফা অ্যান্ড কোম্পানিকে নিয়োগ করা হয় বলে জানা যায় কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো. শাহ আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে। পাশাপাশি অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করে প্রতিবেদন দিতে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানকে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান বীমা কোম্পানির ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালের সামগ্রিক কার্যক্রম তদন্ত করবে। পাশাপাশি বীমা কোম্পানির বিরুদ্ধে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ২৫ পৃষ্ঠার একটি অভিযোগের বিষয়েও তদন্ত চালাবে।
কিন্তু এর দুই মাস পর গত ৩ মার্চ নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানটি থেকে আইডিআরএকে জানানো হয় তারা ওই বীমা কোম্পানির নিয়োগপ্রাপ্ত নিরীক্ষক। এক্ষেত্রে নিরীক্ষককে নিজের কাজের নিরীক্ষা করার দায়িত্ব দেয়া, বিষয়টি এমনই দাঁড়ায়। রহমান মোস্তফা অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফার্ম থেকে এমন চিঠি পেয়ে পরবর্তী মাসের ২৫ তারিখ নতুন চিঠি ইস্যু করে (যার স্মারক নং- ৫৩.০৩.০০০০.০৭১.২৭.০০৩.২০.১৭০) নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বীমা আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী, নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানকে আবারো নিরীক্ষার জন্য দায়িত্ব দেয়া হলে তাতে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের সুযোগ থাকে বলে এই চিঠিতে জানানো হয়। ফলে রহমান মোস্তফা অ্যান্ড কোম্পানির পরিবর্তে সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেনকে উক্ত সালগুলোর বিষয়ে নিরীক্ষা চালাতে নিয়োগ দেয় আইডিআরএ, যা গত ১ জুন চিঠি দিয়ে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে অবহিত করে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
তবে যাচাই-বাছাই ছাড়াই একটি কোম্পানিতে নিরীক্ষক নিয়োগে নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন ভুল বীমাখাতে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার মন্তব্য জানতে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ না করায় মেসেজ পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি কোনো প্রতি-উত্তর দেননি। এরপর পরিচালক মো. শাহ আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঢাকার বাইরে একটি বৈঠকে আছেন জানিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তা (লাইফ) আবু মাহমুদের সাথে কথা বলার পরমর্শ দেন।
পরবর্তীতে আবু মাহমুদ নামে ওই কর্মকর্তাকে ফোন করা হলে তিনি জানান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফার্ম মেসার্স রহমান মোস্তফা অ্যান্ড কোম্পানি যে ফারইস্ট ইসলামী লাইফের স্ট্যাটিউটরি অডিটর এটা আইডিআরএ’র জানা ছিল না। তবে নজরে আসার পরপরই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সিরাজ খান বসাক নামে আরেকটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ওই কোম্পানিতে অডিট করার জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে কোম্পানির নিয়োগকৃত নিরীক্ষককে নিয়োগ করার বিষয়ে ফারইস্ট থেকে আমাদের না জানানোয় একটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হেমায়েত উল্ল্যাহর মন্তব্য জানতে তাকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। পরে যোগাযোগের কারণ জানিয়ে মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে ফোন করা হলে তিনি তখনো ফোন রিসিভ করেননি বা মেসেজের প্রতি-উত্তর দেননি।
Posted ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৫ আগস্ট ২০২১
bankbimaarthonity.com | rina sristy