পান্না কুমার রায় রজত | মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২ | প্রিন্ট | 410 বার পঠিত
গোটা বিশে^র অর্থনীতি অতিমারী ও মন্দায় জর্জরিত। তাই আর্থিক নীতির রূপরেখা অর্থনীতির অবস্থানের উপর নির্ভর করে। মানুষ কর্মহীন হয়েছে। দৈনিক মজুররা দীর্ঘসময়ের জন্য কর্মচ্যুত হয়ে পথে বসেছেন। রোজগার না থাকায় বেশিরভাগ মানুষের আয় সঙ্কোচিত হয়েছে। তাই দিনযাপন করার জন্য সবারই জমানো পুঁজিতে হাত পড়েছে। যারা দারিদ্র্যসীমাকে ইদানীংকালে অতিক্রম করতে পেরেছিলেন, রোজগার না থাকায় আবারো দরিদ্র হয়েছেন, যারা দরিদ্র ছিল তারা হয়েছে দরিদ্রতর। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট তৈরির প্রস্তুতি চলছে। বাজেট আসলেই দেখা যায় কেমন বাজেট হওয়া উচিত, এই ব্যাপারে বিভিন্ন জনের মতামত চাওয়া হয়। এটা খুব সুন্দর গণতান্ত্রিক রীতির পরিচায়ক। দেশ চালাতে যে বিপুল অঙ্কের প্রশাসনিক ব্যয় হয় বাজেটের বড় একটি অংশ দখল করে রাখে সেই ব্যয় আর উন্নয়নমূলক বরাদ্দ থেকে শুরু করে যত কাজ আর যত নেতিবাচক কথাই বলা হোক না কেন দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের চিত্র উজ্জ¦ল হয় সেসব বাজেট বরাদ্দ থেকেই।
করোনা আমাদের কাজের প্রকৃতি বদলে দিয়েছে। করোনার কারণে মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কমে গেছে। ফলে মানুষের আয় কমে গেছে। আয় কমে যাওয়ার ফলে সরকারের রাজস্ব আদায় কমে যাবে। তাই অর্থনীতিতে চাঙ্গা ভাব ফিরিয়ে আনা জরুরি। অর্থনীতিতে চাঙ্গা ভাব ফিরিয়ে আনতে হলে সরকারি ব্যয় বাড়াতে হবে। রাজস্ব আদায় কম হলে কর জাল বাড়াতে হবে। অনুৎপাদনশীল খাতের ব্যয় কমিয়ে উৎপাদনশীল খাতের ব্যয় বাড়াতে হবে। কারণ কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব। কর্মযজ্ঞ সৃষ্টিতে সরকারকেই ভূমিকা নিতে হবে। আর তাই উৎপাদনশীল খাতে সরকারের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিখাতেই বিনিয়োগ বাড়িয়ে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় কর্মমুখী শিক্ষা তথা, আউটকাম বেজড এডুকেশন (ঙইঊ) কারিকুলাম নিয়ে বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। এক্ষেত্রে পরীক্ষার ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দৈনন্দিন কাজের ওপর মূল্যায়ন পদ্ধতি এবং সবার জন্য উচ্চশিক্ষা না রেখে ভোকেশনাল বা হাতে কলমে শিক্ষাব্যবস্থার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা (বিসিএস) কিংবা সরকারি চাকরির গাইড বই নিয়ে ব্যস্ত থাকে। বিশে^ এখন চলছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগ। সেখানে মানুষের বুদ্ধি তথ্যপ্রযুক্তি মেশিন লার্নিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে দৈনন্দিন কাজকর্ম ও বিশ^ পরিচালিত হচ্ছে। ইউনেস্কোর মানদণ্ড অনুযায়ী, যে কোনো দেশের জিডিপির কমপক্ষে ৪ শতাংশ শিক্ষায় বিনিয়োগ করা উচিত। আমাদের এ বিনিয়োগ মাত্র ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অথচ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে পরিণত করতে শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শিক্ষার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে সবচেয়ে কম বিনিয়োগ করে বাংলাদেশ। এমনকি নেপালে ৫ দশমিক ২ ও ভুটানে ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ তাদের চেয়ে শিক্ষার বিনিয়োগ কম। বাজেটে শিক্ষার বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
বিশ^ব্যাপী এখনো রয়েছে করোনা মহামারীর রেশ। কবে কাটবে কেউ জানে না। এরই মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত বিশ^ অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ইউক্রেনের ওপর হামলার জেরে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপানসহ একাধিক দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার বেশিরভাগই অর্থনৈতিক। বিশ^ব্যবস্থার এই পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশেও। যার ফলে, বৈদেশিক মুদ্রা বিশেষ করে ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে। সূর্যমুখী তেল, ভুট্টা, গম ইত্যাদি খাদ্য পণ্যের বাইরে প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় রফতানিকারক দেশ রাশিয়া। ফলে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। এর প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপরেও।
আঙ্কটাডের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বিশে^র বিভিন্ন দেশ যত গম আমদানি করে তার ১৮ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে। গমের ৯ শতাংশ জোগান আসে ইউক্রেন থেকে। শুধু গম নয়, ভুট্টার ১৩ শতাংশ, যবের ১১ শতাংশ, সূর্যমুখী তেলের ৩৬ শতাংশ আসছে ইউক্রেন থেকে। অন্যদিকে বিশ^বাজারের ১২ শতাংশ যব এবং ১৭ শতাংশ সূর্যমুখী তেলের জোগান আসছে রাশিয়া থেকে। ফলে এই যুদ্ধ আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের বাণিজ্য, খাদ্যপণ্যের দাম ও আর্থিক বাজারের জন্য উদ্বিগ্নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাজেটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, কৃষি, মৎস্য ও হালকা প্রকৌশল শিল্পের মতো খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশে ১০-১২ শতাংশ কর্মসংস্থান আনুষ্ঠানিক খাতে, যেখানে নিয়মিত বেতন ও চাকরির অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তাদের রয়েছে। কিন্তু বাকি ৮৮-৯০ শতাংশ কর্মসংস্থান অনানুষ্ঠানিক খাতের ফলে অর্থনীতিতে যে কোনো আঘাত আসলে দেশের এই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ দ্রুতই বিপদে পড়ে। মহামারীকালে দেশে প্রবল দারিদ্র্য বৃদ্ধির কথা উঠে আসছে সরকারি-বেসরকারি পরিসংখ্যানে। বিবিএসের খানা জরিপ অনুসারে ২০১৬ সালে দেশের গ্রামাঞ্চলের সার্বিক দারিদ্র্য ছিল ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০১৮ সালের জিইডি-সানেম জরিপ অনুসারে যা ছিল ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু সানেমের সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, করোনার প্রভাবে ২০২০ সালে এই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ। আমরা লক্ষ করলে দেখতে পাই, দারিদ্র্যের আরেকটি ফল হলো শিক্ষাগ্রহণ ব্যাহত হওয়া। জরিপে দেখা গেছে, ২০১৮ ও ২০২০ সালের মাথাপিছু গড় শিক্ষা ব্যয় কমেছে। অতিদরিদ্র পরিবারের জন্য এই হার হ্্রাস সবচেয়ে বেশি ৫৮ শতাংশ। দারিদ্র্য বাড়তে থাকার পাশাপাশি দেশে প্রবলভাবে বৈষম্যও বাড়ছে। ২০২১ সালে দেশে শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনীর আয় ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। অর্থাৎ শীর্ষ আয়ের মানুষের সঙ্গে নিম্নআয়ের মানুষের আয়ের ব্যবধান যোজন যোজন। এই বাস্তবতা অস্বীকার করার যেমন উপায় নেই, তেমনি দারিদ্র্য ও বৈষম্য কমাতে না পারলে কোনো উন্নয়নই যে টেকসই হবে, না তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও সূচকের ঊর্ধ্বগতি নিশ্চিত করতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জোগান একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ শর্ত। বিদ্যুৎ অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। দেশের কৃষি, শিল্প, সেবাখাতসহ দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুতের অস্তিত্ব ছাড়া জীবন কল্পনা করা অসম্ভব। অর্থনীতিতে বিপুল সম্ভাবনা সৃষ্টি এবং গতি আনতে বিদ্যুৎ সুবিধা শক্তিশালী অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে সবসময়। কৃষিপ্রধান দেশে আমাদের কৃষির বাইরেও অন্য অনেক পেশায় কর্মরত থাকার ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যবহার লক্ষণীয়। বর্তমানে ছোট-বড় সবধরনের ধান-কল থেকে শুরু করে গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থাকরণ হাঁস-মুরগির খামার, যন্ত্রচালিত যানবাহনে বিদ্যুতের ব্যবহার নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করছে। সরকারি-বেসরকারি অংশগ্রহণের মাধ্যমে দক্ষ ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠেছে। সহনীয় দামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারার বিষয়টা বিবেচনায় রাখতে হবে। বাংলাদেশে ক্ষেতে-খামারে দ্রুত উৎপাদন বাড়ছে। তাতে আমরা সমস্যাও দেখতে পাচ্ছি। কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। বিপণন প্রক্রিয়ায় লাভবান হচ্ছে একশ্রেণির মধ্যস্বত্বভোগী ফরিয়া বা ব্যবসায়ী। প্রতিটি ফসলের উৎপাদন মৌসুমে যেমন ধানের মূল্য থাকে কম, পরে তা বেড়ে হয়ে যায় দ্বিগুণ। তখন কৃষকের ঘরে আর ধান থাকে না। এর লাভ পুরোটাই নিয়ে যায় স্থানীয় ব্যবসায়ী চালের আড়তদার ও চাতাল মালিক। সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
করোনাকালীন এটি একটি সংকটকালীন সময়। একদিকে যেমন দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতে হবে, অন্যদিকে পুষ্টিকর খাদ্য ডিম, দুধ, মাছ ও মাংসের উৎপাদন ব্যবস্থাকে সচল রাখতে হবে। অন্যথায় ভয়াবহ খাদ্য ও পুষ্টি সংকটে পড়বে দেশ ফলে প্রচুর মানুষ বেকার হয়ে যাবে। তাই পশুখাদ্য তৈরির সকল ব্যবহৃত সবধরনের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানিতে বাজেটে ভর্তুকি দেয়া প্রয়োজন। চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাপক আলুর আবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে আশাতীত। আলু যখন প্রথম বাজারে আসে, তখন দামও ছিল বেশি। সকল আলু যখন উত্তোলন হলো, তখন আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগারে রাখার আর জায়গা নেই। জায়গা স্বল্পতার কারণে হিমাগারে আলু রাখার স্থান হচ্ছে না। তাই আলু সংরক্ষণে কৃষকদের বাড়িতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আলু সংরক্ষণে পরামর্শ দেয়া যেতে পারে। চলতি অর্থবছরে তৃতীয় সর্বোচ্চ রফতানি আয় এসেছে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য থেকে। ইপিবির প্রকাশিত তথ্য মোতাবেক, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে এ খাতের পণ্য রফতানি করে আয় হয়েছে ৯৫ কোটি ৮৪ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি। তাই আমাদের রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হবে।
যমুনার বুকে জেগে ওঠা চর এখন কৃষি পরিবারে অর্থনৈতিক অবদান রাখছে। বর্ষার পর পানি নেমে গেলে পলি পড়ে জমির উর্বরতা শক্তি বেড়ে যায়। ফলে, প্রচুর পরিমাণ নানাধরনের সবজিসহ বাদাম, ভুট্টা, গম, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, ধানসহ ব্যাপক ফসলের চাষ হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ কৃষি বিভাগের তথ্য মোতাবেক চলতি বছর যমুনা চরে ৭ হাজার ৪০০ হেক্টর ভুট্টা, ৫ হাজার ১৪০ হেক্টর বাদাম, ১ হাজার হেক্টর মরিচ, সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর খেসারি, ২ হাজার ৫৫০ হেক্টর মসুর, ৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়েছে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না থাকায় সবজি সহজে অন্যত্র নিতে না পারার কারণে কৃষক ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারছে না। তাই বাজারজাত ব্যবস্থাপনার জন্য কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে। তার জন্য চরে যোগাযোগব্যবস্থার সহজ বাহন বা যানবাহনের ব্যবস্থা করে কৃষকদের ন্যায্যমূল্যের ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক বৈপ্লবিক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে হবে।
আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির ভিত্তি শক্ত রাখতে হবে। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে হবে। বাজারে ভোজ্যতেলের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ভোজ্যতেলের আমদানি-নির্ভরতা কমিয়ে আনতে হবে। উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে ১৩ লাখ ৫৫ হাজার টন পাম তেল, ৭ লাখ ৮০ হাজার টন সয়াবিন তেল আমদানি করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ১৮৪ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। বাংলাদেশ বিশে^র তৃতীয় শীর্ষ সয়াবিন তেল আমদানিকারক দেশ। বর্তমানে বাংলাদেশে আবাদি জমির মাত্র ৪ ভাগ তেল ফসলের আবাদ হয়ে থাকে। তাই উৎপাদন বৃদ্ধিতে মাঠপর্যায়ে আবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য এলাকাভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা জরুরি। কৃষকদের উন্নত বীজ সরবরাহ, আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহার, প্রশিক্ষণ ইত্যাদির মাধ্যমে তেলবীজ ফসলের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব, তাহলে আমদানি-নির্ভরতা কমবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ভারসাম্য থাকতে হবে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে। যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠছে এবং অঞ্চলগুলোতে বিভিন্ন দেশ থেকে বিনিয়োগ আনয়নের পরিবেশ গতিশীল রাখতে হবে। আয়ের সুন্দর দিকনির্দেশনা থাকতে হবে। আয় করার অনেক সুযোগ আছে সে বিষয়ে গাইডলাইন থাকা প্রয়োজন। গ্রামের ইউনিয়ন পর্যন্ত আয়ের খাত বিস্তৃত করতে হবে।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে জনপ্রতি আয় ছিল ১০০ মার্কিন ডলারের নিচে। অর্ধশতাব্দী পর এখন তা উন্নীত হয়েছে ২ হাজার ৫৯১ মার্কিন ডলারে। তবে আয়বৈষম্য হ্রাসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তেমন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি, বরং অবনতি হয়েছে। তাই এ বৈষম্য কমাতে হবে। বৈষম্য রয়েছে গ্রাম ও শহরের জীবনধারায়। এগুলো দূর করতে হবে। এজন্য দরকার গ্রামীণ অর্থনীতি বহুমুখীকরণ, কর্মসংস্থান বাড়ানো, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করা, পুঁজি গঠন ও আয়বর্ধন কর্মকাণ্ড গ্রহণ করা, খাদ্য-নিরাপত্তা অর্জন করা।
করপোরেট কর কমিয়ে আনতে হবে, করোনা প্রভাব মোকাবিলা এবং রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্টি হওয়া নতুন বৈশি^ক পরিস্থিতি মোকাবিলা করার পর্যাপ্ত সৃজনশীল পদক্ষেপ নিতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়নের জোয়ার ও দেশের উন্নতি আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং এবং বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ সব মøান হয়ে যাবে, যদি নিত্যপণ্যের দামের আশঙ্কা জনগণকে কাঁদায়। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা সহজলভ্য ও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমদানি চেন ঠিক রেখে সাপ্লাই চেন সচল রাখার মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমিয়ে আনা সম্ভব।
Posted ৩:৪৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy