নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট | 462 বার পঠিত
অতিরিক্ত কমিশন বন্ধ, ইন্ট্রিগ্রেটেড সফ্টওয়ার ব্যবহার, মোটর ইন্স্যুরেন্স বাধ্যতামূলক করা, লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ন্যায় এজেন্ট ব্যবসা পরিচালনা করার বিষয়ে দাবি উঠেছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের আলোচনা সভায়। সোমবার (৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় এসব দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স খাতের নানা সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন বিভিন্ন কোম্পানি চেয়ারম্যান ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা।
সভায় শেখ কবির হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতে শুরু হলো রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব পরেছে। এতে নন-লাইফ বীমা খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশি। বৈশ্বিক এই পরিস্থিতির জন্য আমাদের দেশে এলসি কমে গেছে। এলসি কমাতে মেরিন ইন্স্যুরেন্স কমে গেছে। ফলে বাজারে চলছে অসম প্রতিযোগিতা। এই অসম প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) নির্ধারিত ১৪.২৫ শতাংশ কমিশন দিয়ে ব্যবসা করার জোর দাবি জানান সংশ্লিষ্টদের প্রতি।
সভায় মোটর ইন্স্যুরেন্স নিয়ে বক্তারা বলেন, থার্ড পার্টি ইন্স্যুরেন্স বাতিল করায় গোটা মোটর বীমার ব্যবসা কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ফলে বক্তাদের পক্ষ থেকে মোটর ইন্স্যুরেন্স বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে দাবি জানালে প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন বলেন, আমরা আইডিআরএ ও মন্ত্রণালয়ের সাথে বসবো। মোটর ইন্স্যুরেন্স বাধ্যতামূলক করার জন্য জোর দাবি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হবে।
এছাড়া বক্তাদের বক্তব্যের আলোকে শেখ কবির হোসেন নন-লাইফের বীমা কোম্পানিগুলোকে প্রযুক্তির আওতায় আনতে ইন্ট্রিগ্রেটেড সফ্টওয়ার চালুর বিষয়ে জোর দেন। যেসব কোম্পানির ইন্ট্রিগ্রেটেড সফ্টওয়্যার নেই সেসব কোম্পানিকে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার টেকনিক্যাল সহায়তা করা হবে বলে জানান তিনি।
বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে শেখ কবির হোসেন দেশে লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মতো নন-লাইফেও এজেন্টভিত্তিক ব্যবসা পরিচালনার জন্য এজেন্ট নিয়োগের যে নীতিমালা রয়েছে তা সঠিকভাবে পালনের আহ্বান জানান।
সভায় সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের সাথে নন লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর পুনঃবীমা দাবি নিষ্পত্তি সংক্রান্ত জটিলতা কীভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, সাধারণ বীমা যথাসময়ে পুনঃবীমা দাবি পরিশোধ না করার কারণে প্রাইভেট কোম্পানিগুলো আস্থা সংকটে পড়েছে। সাধারণ বীমা পুনঃবীমা দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে নানা রকম কাগজ পত্র চাচ্ছে যেগুলো বীমার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এজন্য সাধারণ বীমার নির্দিষ্ট ক্লেইম ম্যানুয়েল তৈরি করার আহ্বান জানান।
এছাড়া আলোচনা সভায়, ব্যাংকিং সিস্টেম ফলো করে বীমা কোম্পানিগুলোতে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। যাতে সকল বীমা কোম্পানিতে একই নিয়মে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিয়োগ অনুমোদন করা হয়। এছাড়া গত দু-তিন বছরে কিছু কোম্পানির ব্যবসা অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে আবার কিছু কোম্পানির ব্যবসা হ্রাস পেয়েছে, কি কারণে এই অসামঞ্জস্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়েও আলোচনা করা হয়। এছাড়া বক্তাদের পক্ষ থেকে বীমা কোম্পানিগুলোর লাইসেন্স নবায়ন ফি আরো হ্রাস করার আহ্বান জানান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান আনিস উদ দৌলা, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহমেদ, রূপালী ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মোজাফফর হোসেন পল্টু, নিটল ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান এ কে এম মনিরুল হক, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন আহমেদ পাভেলসহ প্রমুখ।
Posted ৮:২৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৩
bankbimaarthonity.com | rina sristy