মোহাম্মদ জমির | সোমবার, ১৩ মে ২০১৯ | প্রিন্ট | 564 বার পঠিত
সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক দুর্নীতি এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডগুলো অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে সমাজবিজ্ঞানীদের এমডিজির পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা এবং এসডিজির চ্যালেঞ্জগুলো পুনরায় পর্যালোচনার দিকে ঠেলে দেয়। এ পর্যায়ে বিশেষজ্ঞরা সাধারণ উপসংহারে উপনীত হন যে, বিকাশের অধিকার একটি অবিচ্ছেদ্য ও পরস্পর নির্ভরশীল পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত এবং পারস্পরিক অন্তর্ভুক্তি ও যৌথ অধিকার, যা সব দেশের সব নাগরিকের জন্য সমান প্রযোজ্য এবং এখানে কোনো ধরনের বৈষম্যের সুযোগ নেই।
সম্প্রতি শুধু বাংলাদেশ নয়, জেনেভা ও নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ মর্মে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে যে, জাতিসংঘ ঘোষিত উন্নয়ন অধিকারের লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি। সভায় অংশগ্রহণকারীরা স্বভাবতই তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ও উন্নয়ন অধিকারের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আহ্বানকে সমর্থন দিয়েছেন।
এ অবস্থায় জেনেভায় অনুষ্ঠিত ২০তম অধিবেশনে তারা সবাই উন্নয়ন অধিকার-বিষয়ক আন্তঃসরকারি কার্যনির্বাহী দলকে স্বাগত জানিয়েছেন। একই সঙ্গে উন্নয়ন অধিকারের আইনগত বাধ্যতামূলক খসড়া তৈরির সম্ভাবনাকেও অভিনন্দিত করেছেন।
ঘটনাক্রমে আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ওআইসি চার্টার বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা ২০২৫ অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ইসলামিক সংস্থাও (ওআইসি) উন্নয়ন অধিকারের কাজে সমন্বয় ও গতিযোগের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, বিশেষ করে মানবাধিকার উন্নয়ন, মৌলিক স্বাধীনতা, সুশাসন, আইনের শাসন, গণতন্ত্র এবং সদস্য দেশগুলোর প্রতি জবাবদিহিতার বিষয়গুলো ঘিরে।
এক্ষেত্রে ওআইসির সাধারণ সম্পাদক ড. ইউসুফ আল-ওথাইমেনের শক্তিশালী বিবৃতিটি উল্লেখ্য। তিনি সুনির্দিষ্ট করে বলেছেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের পরিসংখ্যান অনুসারে, দুর্নীতির ফলে বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে প্রায় ৩ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, যা কিনা বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর উন্নয়ন প্রচেষ্টার সহায়তা প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
ওআইসির মহাসচিব আরো পর্যবেক্ষণ করেছেন, ওআইসি তালিকাভুক্ত অনেক দেশের মধ্যে সুশাসন ও টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাধা রয়েছে, যা দারিদ্র্য বিমোচন প্রক্রিয়ায় হতাশা যোগ করে।
পরবর্তীকালে ওআইসি- স্বাধীন স্থায়ী মানবাধিকার কমিশনের ১৫তম সেশনে নির্বাচিত সদস্য হিসেবে আমি কয়েকটি বিষয় দৃঢ়তাসহকারে পুনর্ব্যক্ত করেছি ১) দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গুরুত্ব, যা সব ভৌগোলিক অঞ্চলের দেশগুলোয় মহামারী আকার ধারণ করেছে এবং যা শুধু ক্ষতি করছে না, বরং সাধারণের মানবাধিকারের পাশাপাশি উন্নয়ন অধিকারকে প্রভাবিত করছে; ২) সুশাসনের গুরুত্ব এবং উন্নয়নে সমাজের সব বিভাগের সক্রিয়, মুক্ত ও অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ, উপলব্ধি এবং উন্নয়ন নীতির মূল্যায়ন; ৩) সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে উন্নয়নের অধিকার অর্জনে বেসরকারি খাতকে কাজে লাগাতে হবে; এবং ৪) আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব/ বর্তমান বাস্তবতার সঙ্গে বিশ্বব্যাপী আর্থিক শাসন কাঠামো সংস্কার।
ওআইসি স্বাধীন স্থায়ী মানবাধিকার কমিশনের ১৫তম অধিবেশনে জাতিসংঘের উন্নয়ন অধিকার-বিষয়ক বিশেষ দূতের অংশগ্রহণকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি জ্ঞান এবং শিক্ষা-বিষয়ক অনুশীলনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সংযোগ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়া হয়। এ ব্যাপারে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংককে ওআইসির অন্যান্য সদস্য দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরো বৈচিত্র্যভাবে আন্তঃসক্রিয় কার্যক্রমের গতিবৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক উন্নয়ন এ ধরনের বিশেষ বিশেষ প্রকল্পের প্রতি মনোযোগ দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
খানিকটা পেছন ফেরা যাক, ১৯৯১ সালে মানবাধিকার ও গণ-অধিকারের ওপর আফ্রিকান চার্টারের একটি স্বতন্ত্র ব্যক্তিগত ও যৌথ অধিকার হিসেবে উন্নয়ন অধিকারটি প্রথম স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছে, ‘সব মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের অধিকারের পাশাপাশি স্বাধীনতা, পরিচয় ও মানবজাতির সাধারণ ঐতিহ্য উপভোগের সম-অধিকার রয়েছে।’ পরবর্তীকালে ১৯৮৬ সালে জাতিসংঘ ‘ডিক্লিয়ারেশন অন দ্য রাইট টু ডেভেলপমেন্ট’-এ উন্নয়ন অধিকারের ঘোষণা প্রদান করা হয়, যা কিনা ‘জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব ৪১/১২৮ দ্বারা গৃহীত হয়’। বিষয়টি স্পষ্ট যে, উন্নয়ন অধিকার জনসাধারণের গোষ্ঠীগত অধিকার, একই সঙ্গে একটি স্বতন্ত্র অধিকারও। পরবর্তীকালে ১৯৯৩ সালের ভিয়েনা ঘোষণাপত্র এবং কর্মসূচি দ্বারা এটিকে পুনঃনিশ্চিত করা হয়। জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও অফিসে উন্নয়নের অধিকার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত।
এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে, উন্নয়নের অধিকার-বিষয়ক প্রস্তাবনাটি আরো বিবৃতি দেয় যে, উন্নয়ন একটি ব্যাপক অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এবং যা সমগ্র জনসংখ্যার সুসংহত উন্নতিতে লক্ষ রাখে এবং উন্নয়নের সবার সক্রিয়, স্বাধীন এবং অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুবিধার ন্যায্য বণ্টনের বিষয়টি নিশ্চিত করে। এক্ষেত্রে মনে রাখা জরুরি, ওই বিষয়গুলো নিশ্চিত করার জন্য কোনো পক্ষপাতমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন নেই, কিন্তু জাতি, ধর্ম, সংস্কৃতি নির্বিশেষে সমান সুবিধা দিতে হবে।
আলোচনার এ পর্যায়ে ভিয়েনা ঘোষণাপত্র এবং কর্মসূচির দশম অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। যেখানে বলা হয়েছে, মানবাধিকার সম্পর্কিত বিশ্ব সম্মেলন একটি সর্বজনীন ও অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং মৌলিক মানবাধিকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে উন্নয়নের অধিকারকে নিশ্চিত করে।
এর মানে উন্নয়নের বাধা দূর এবং বিকাশ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দেশকে পরস্পরের সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলোকে উন্নয়নের অধিকার এবং বিকাশের বাধাগুলো দূর করার লক্ষ্যে কার্যকর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে হবে। উন্নয়নের অধিকার বাস্তবায়নে চলমান অগ্রগতির ফলে জাতীয় পর্যায়ে কার্যকর উন্নয়ন নীতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ন্যায়সঙ্গত অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশের প্রয়োজন হবে।
এ পর্যায়ে আরো দুটি ঘোষণাপত্রের উদাহরণ টানা প্রাসঙ্গিক হবে—
১) পরিবেশ ও উন্নয়ন-বিষয়ক রিও ঘোষণাপত্র যেখানে ২৭টি মূলনীতির মধ্যে একটিতে উন্নয়ন অধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এমনকি ঘোষণাপত্রের ৩ নং নীতিতে বলা হয়েছে, উন্নয়ন অধিকারকে অবশ্যই প্রতিপালন করতে হবে, যাতে ন্যায়সঙ্গতভাবে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উন্নয়ন ও পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এবং
২) ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী জনগণের অধিকার-বিষয়ক ঘোষণাপত্রের ২৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর উন্নয়ন অধিকারকে স্বীকৃত দেয়া হয়েছে। যেখানে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী তাদের উন্নয়নের অধিকার অনুশীলনের জন্য অগ্রাধিকার ও কৌশল নির্ধারণের অধিকার রাখে। বিশেষত, উন্নয়ন কার্যক্রমে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য, আবাসন এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রমে সংক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার অধিকার রয়েছে এবং যতদূর সম্ভব তাদের নিজস্ব সংস্থার মাধ্যমে এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
এরূপ উন্নয়ন কার্যক্রমে উন্নত দেশ, উন্নয়নশীল দেশ কিংবা স্বল্পোন্নত দেশে উন্নয়ন অধিকারকে রাজনৈতিকীকরণ কিংবা পক্ষপাতিত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা উচিত হবে না।
এখানে যে বিষয়টি স্বীকার করতে হবে তাহলো, এমডিজি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন প্রচেষ্টা পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি সফল কাঠামো কাজ করেছে। এটি ২০১৫ সাল নাগাদ চরম দারিদ্র্যের মাত্রা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে সাহায্য করেছে। অর্জিত হয়েছে অন্যান্য আরো কিছু সাফল্য, যেমন—নিরাপদ খাবার পানি, ম্যালেরিয়ার সমস্যা মোকাবেলা এবং স্কুলে লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা।
যেহেতু এমডিজি যুগের সমাপ্তি ঘটেছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০১৫ সাল থেকে উন্নয়নের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বান কি মুন একে ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে অ্যাখ্যায়িত করে বলেছেন, এটি একটি সম্মিলিত প্রয়াস। এমজিডির সাফল্যের সূত্র ধরে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজিতে ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা এবং ১৬৯টি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০১৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ প্রস্তাবনা ৭০/১-এর শিরোনাম দেয়া হয়েছে ‘ট্রান্সফমিং আওয়ার ওয়ার্ল্ড: দ্য ২০৩০ এজেন্ডা ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ যেখানে ১৭টি নতুন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যেগুলো ২০১৪ সাল থেকেই প্রস্তাবনা হিসেবে উত্থাপিত হয়ে আসছিল। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া নতুন এ লক্ষ্যমাত্রাগুলোর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক বৈষম্য, গণতন্ত্র, দরিদ্র এবং শান্তি স্থাপনের ক্ষেত্রগুলোয় নজর দেয়া হয়েছে।
এমডিজির ওপর ভিত্তি করে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এক্ষেত্রে কিছু মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান। এমডিজির মতো এসডিজির লক্ষ্যমাত্রাগুলো নির্ধারণের ক্ষেত্রে মাসের পর মাস আলোচনা হয়েছে, যাতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, এনজিওর অংশগ্রহণ রয়েছে। তাছাড়া আন্তঃসরকারি সম্মেলনের আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করা হয়। বৈশ্বিক নতুন এজেন্ডাগুলো যৌথ কর্মকাণ্ডের ওপর জোর দেয়, লক্ষ্যগুলোর স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য একাধিক অংশগ্রহণকারীর প্রচেষ্টাকে সমন্বিত করে। তাছাড়া এটি এমন একটি টেকসই ব্যবস্থার ওপর জোর দেয়, যা কিনা সংমিশ্রিত অংশীদারিত্ব, পরিবেশগত এলাকাজুড়ে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, শিক্ষাগত এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে পরিচালনা করে।
বাংলাদেশ এসডিজির লক্ষ্যমাত্রাগুলো যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। আমরা সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। একই সঙ্গে বিশ্লেষকরা মনে করেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের জন্য আমাদের প্রায়োগিক ভারসাম্য স্থাপনের প্রক্রিয়াগুলো অন্যান্য আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসূত্র শক্তিশালীকরণের পাশাপাশি বৃহত্তর দক্ষতা উন্নয়ন এবং যথাযথ নিয়ন্ত্রক শাসনের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে। তাছাড়া এটি সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং বাংলাদেশের চরম দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াগুলোয় ত্বরান্বিত করবে।
আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, উন্নতি মানে শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নয়। বরং সাধারণ মানুষকে পরিপূর্ণরূপে তাদের জীবনমানের ক্ষমতা প্রদানও।
লেখক: সাবেক রাষ্ট্রদূত, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার
Posted ২:০৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৩ মে ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed