মোহাম্মদ মুনীরুজ্জামান | বুধবার, ০২ জানুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 1047 বার পঠিত
২০১৮ সাল ব্যাংক খাতে নানা কেলেঙ্কারির বছর। তবে দেশ ব্যাপি রাজনৈতিক পরিবেশ নিরুত্তাপ থাকায় অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ওপর তেমন কোন চাপ সৃষ্টি হয়নি। মূলধন সংকট, ঋণ খেলাপি, নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে ব্যাংক খাতে। তারপরেও ২০১৮ সাল শেষে অধিকাংশ ব্যাংকেরই পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। কিন্তু নিট মুনাফা বাড়বে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এর সঙ্গে হুহু করে বাড়ছে খেলাপি ঋণ, যা শুভ লক্ষণ নয়। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন বছরে গঠিত হতে যাওয়া সরকার উদ্যোগী হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
সাম্প্রতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। এতে জানানো হয়, পরিচালন মুনাফা বৃদ্ধির কাতারে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক, পূবালী, ডাচ্-বাংলা, এক্সিম, ঢাকা, সাউথইস্ট, ইস্টার্ন, ব্যাংক এশিয়া, ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স (এনসিসি), প্রিমিয়ার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, শাহ্জালাল ইসলামী, মার্কেন্টাইল ও আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক। অপরদিকে পরিচালন মুনাফা কমিয়ে যাওয়ার তালিকায় রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও মেঘনা ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মধ্যে এবার লোকসান দিয়েছে বেসিক ব্যাংক।
এ কথা সত্য যে, পরিচালন মুনাফা অর্জনই ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা নয়। প্রতি বছর ব্যাংকের নিরীক্ষিত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়, যেখানে চূড়ান্ত হিসাব তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়া নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ব্যাংকের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ শেষে এবং করের টাকা পরিশোধের পর প্রকৃত মুনাফার চিত্র পাওয়া যাবে। তবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকিং খাতের যে নেতিবাচক ঘটনার খবর উঠে আসছে, তার মধ্যে পরিচালন মুনাফার একটি ভালো সংবাদ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
ব্যাংকগুলোর স্থিতিপত্রের অবস্থা ভালো দেখানোর জন্য পরিচালন মুনাফা বাড়িয়ে দেখানোর একটা প্রবণতা আছে।
এসব ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতির ওপর দেশের বাণিজ্য বা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনেকাংশেই নির্ভরশীল। ঋণ খেলাপির কারণে ব্যাংক পরিচালনায় অনেক সমস্যা হচ্ছে বলেও জানা যায়। বর্তমান সরকারের অনেক সাফল্যের পরও ব্যাংক খাত নিয়ে ছিল বড় রকমের সমালোচনা। দেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনে অভাবনীয় সাফল্যও ব্যাংক খাতের অব্যবস্থাপনার কারণে সাধারণ মানুষের কাছে ভালো বার্তা দিতে পারেনি। তাই নতুনভাবে গঠিত হতে যাওয়া সরকারকে ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। জাতীয় স্বার্থেই নতুন সরকারকে এ বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
Posted ৬:৪৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০২ জানুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed