| সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪ | প্রিন্ট | 110 বার পঠিত
সম্প্রতি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিামাঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২০ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে আরো অনেকেই।
এই ঘূণিঝড়ের কারণে বিভিন্ন জেলায় ফসল ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র মতে, ঘূণিঝড়ে দেশের অন্তত ২০টি জেলায় ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতির পরিমাণ ৭ হাজার কোটি টাকা। ফসলের ক্ষেত্রে উঠতি ফসল বিনষ্ট হয়েছে। অনেকেই ঝড়ের কারণে গৃহহারা হয়েছেন। অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, ঘূর্ণিঝড়ে আর্থিক ক্ষতির প্রাথমিক যে হিসাব দেয়া হয়েছে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ তার চেয়ে অনেক বেশি হবে। চূড়ান্ত হিসাব না পাওয়া পর্যন্ত ঝড়ের ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। গত ২৬ মে উপকূলীয় অঞ্চলে এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগে থেকেই আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক বাণী উচ্চারণ করেছিল। ফলে সাধারণ মানুষ আগে থেকেই কিছুটা হলেও সতর্ক হতে পেরেছিল। এতে ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হরিণসহ বিভিন্ন প্রাণী মারা গেছে ব্যাপকভাবে। গাছপালা ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা নয়। প্রায় প্রতি বছরই ছোট বড় ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যায়। বিশেষ করে উপকূলীয় বিস্তৃর্ণ এলাকার উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ ঘূণিঝড় প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। আমরা চাইলেও কোনোভাবেই সম্পূর্ণরূপে ঘূর্ণিঝড় মুক্ত থাকতে পারবো না। তবে আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করা গেলে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতির প্রভাব থেকে কিছুটা হলেও মুক্ত থাকতে পারবো। ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়া। বিশেষ করে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের কারণে আবহাওয়া ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বৃক্ষরাজি কমে যাবার কারণে ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ সরাসরি মানুষের উপর প্রভাব ফেলছে।
সাম্প্রতিক নিকট অতীতের বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এসব ঘূর্ণিঝড়ের বেশির ভাগই সুন্দরবন এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি হলেও মানুষের জীবন এবং সম্পদ অনেকটাই রক্ষা পেয়েছে। একটি দেশের মোট আয়তনের অন্তত ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে এখন বনভূমির পরিমাণ কমতে কমতে ৮ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। মানুষের অপরিণামদর্শী কার্যকলাপই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সৃষ্ট ক্ষতির সবচেয়ে বড় কারণ। তাই আমাদের আগামীতে ব্যাপক হারে বৃক্ষ রোপনের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে।
Posted ৫:২৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪
bankbimaarthonity.com | rina sristy